আওয়ার ইসলাম: বাঁশখালী উপজেলার বাহারচরা রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদানকালে ইসলাম নিয়ে কটূক্তি, ইসলামকে জঙ্গিবাদের ধর্ম আখ্যা ও ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’ এটা কোন ডিকশনারিতে আছে- এমন মন্তব্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক শিবানন্দ দেবের (৩২) বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ ধর্মপ্রাণ গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি প্রদান ও অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় বাঁশখালী উপজেলার বাহারচরা রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা ও বাহারচরা ইউনিয়ন মুসলিম ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
প্রায় দুই শতাধিক লোকজনের সমাগমে বিক্ষোভ মিছিলটি বশিরউল্লাহ বাজার থেকে বাহারচরা রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মার্চ ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক স্বপন কান্তি দাশ শিবানন্দ দেবকে দশম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা ক্লাসের পরিবর্তে বাংলা ক্লাস করার জন্য পাঠান। কিন্তু শিবানন্দ দেব বাংলা ক্লাস না নিয়ে ইসলাম ধর্ম অর্থ কী? জিজ্ঞাসা করলে দশম শ্রেণির ছাত্র মুহা. রাকিব উত্তরে বলেন ‘শান্তির ধর্ম’। তাৎক্ষণিক শিবানন্দ দেব ইসলামকে জঙ্গিবাদের ধর্ম আখ্যা দিয়ে ও ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’ এটা কোন ডিকশনারিতে আছে দেখাও বললে ছাত্র মুহা. রিদুয়ান ইসলাম শিক্ষা বই থেকে স্যারকে দেখায়।
এতে রেগে ওই শিক্ষক ক্লাস থেকে চারজন ছাত্রকে বের করে দিয়ে ইসলাম ধর্মকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও কটূক্তি করতে থাকে। পরে ছাত্ররা অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক স্বপন কান্তি দাশকে ডেকে নিয়ে আসলে তিনি শিবানন্দ দেবকে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে ক্লাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বললেও অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ক্লাস থেকে বের না হয়ে উল্টো ক্লাসরুমে অবস্থান করেন। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পরে স্বপন কান্তি দাশ ছাত্রদের ক্লাস থেকে ছুটি দিয়ে দেন। তাছাড়া ওই শিক্ষক এই ধরনের ঘটনা পূর্বেও বহুবার ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা।
বাহারচরা ইউনিয়ন মুসলিম ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা তৈয়্যব বিন মুখতার গণমাধ্যমকে বলেন, ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটূক্তিকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্মারকলিপি প্রদান করি।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মৃদুল কান্তি দে আগামী ১৭ মার্চ স্কুল কমিটির মাসিক জরুরি বৈঠকের মাধ্যমে একটা ব্যবস্থা ও সিদ্ধান্ত নিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেন। তাছাড়া এ সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষক সাময়িকভাবে স্কুলে আসা বন্ধ রেখেছেন বলেও জানান প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ওসি মুহা. রেজাউল করিম মজুমদার জানান, ইসলাম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এখনো আমার কাছে আসেনি, তবে ঘটনার সত্যতার তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এএ