আওয়ার ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি আল্লামা আব্দুল মুমিন (শায়েখে ইমামবাড়ি) বলেছেন, ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ ইসলাম ও দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম রাজপথে সক্রীয় ভূমিকা পালন অব্যাহত রেখে আসছে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র কর্মী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আব্দুল মুমিন শায়েখে ইমামবাড়ি এ কথা বলেন। আজ শুক্রবার বেলা ২টায় রাজধানী ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করা হয়েছে সর্বস্তরে ইনসাফ, সুবিচার, সাম্য ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পূর্ণ হতে চলেছে অথচ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় পরিস্থিতির আরো গভীর অবনতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ দেশের সর্বত্র এক জুলুম ও ত্রাসের রাজত্ব চলছে। জনগণের নাগিরক অধিকার ভয়াবহভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমাদের শিক্ষা, সাংস্কৃতি, ধর্মীয় স্বাধীনতা, ইতিহাস, অর্থনীতি, জাতীয় পরিচিতি, দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্রের কবলে।
‘সীমান্ত হত্যা, নদীহত্যা, বাণিজ্য-বৈষম্য, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভয়াবহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনে আজ পুরো জাতি হতাশ, ক্ষুব্ধ ও শঙ্কিত। দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে অন্যায়ভাবে সরকার দখল করে রেখেছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না’।
তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক লুটপাট, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, সামাজিক বৈষম্য, বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া, প্রশাসনের দলবাজিসহ এমন কোন খাত নেই, যেখানে ইতিবাচক উল্লেখ করার মতো কিছু আছে। সাধারণ মানুষ যে ভাল নেই, সেটাও বলতে দিচ্ছে না। ফলে যেভাবে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হয়েছে, আজ সময় হয়েছে জুলুম ও আধিপত্যবাদ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
কর্মী সম্মেলনের প্রধান বক্তা ও দলের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, জমিয়ত আল্লাহর জমীনে আল্লাহ’র নেজাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সর্বস্তরে ইনসাফ, সমতা, সুবিচার, গণমানুষের ন্যায্য অধিকার এবং সহনশীল ও শান্তিপূর্ণ শক্তিশালী সমাজ ও দেশ গড়াই জমিয়তের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, জমিয়ত জ্বালাও-পোড়াও ও ভাংচুরে বিশ্বাস করে না। জমিয়ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার নিয়ে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও অধিকার আপনা আপনি কেউ ফিরিয়ে দিবে না। এসব কেড়ে নিয়ে জুলুমের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে আপনা আপনি ফিরিয়ে দিতে নয়। জনগণকে সোচ্চার হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং এসব অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগী মানসিকতা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
জমিয়তের প্রতিটি নেতাকর্মীকে দেশ, জাতি, শান্তি ও মানবাধিকারের পক্ষে দলীয় শৃঙ্খলার আওতায় সর্বোচ্চ চেষ্টা-সাধনার মাধ্যমে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সহসভাপতি আল্লামা শায়েখ জিয়া উদ্দীন বলেন, ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি বিশ্ব শান্তির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানও উপহার দিয়েছে ইসলাম। ইসলামের এই জীবনবিধান বাস্তবায়ন করা গেলে মুসলিম, অমুসলিম সকলেই শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন এবং রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতি সহজেই অর্জিত হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দীন খানের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- সহসভাপতি মাওলানা জহিরুল হক ভূঁইয়া, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল বাছির, মাওলানা এডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী।
[caption id="attachment_175956" align="aligncenter" width="300"] বই কিনতে ক্লিক করুন[/caption]
যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ জামী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মুফতি মাসউদুল করীম, প্রিন্সিপাল মাওলানা শোয়াইব আহমদ, মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা মতিউর রহমান কাসেমী, মাওলানা খলীলুর রহমান, মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী।
মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির, মাওলানা আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা মাহবুব উল্লাহ, মাওলানা শাহ জালাল, মাওলানা বশীর আহমদ, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মাওলানা আব্দুল গফফার ছয়ঘরী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-হাসান, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী, মাওলানা আফজাল রহমানী, মাওলানা জামিল আহমদ আনসারী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল জলিল ইউসুফী, মাওলানা কামরুজ্জামান, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আব্দুর রহীম, মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা ফখরুজ্জামান, মাওলানা বশিরুল হাসান খাদিমানী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা নূর মুহাম্মদ, মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী প্রমুখ।
-এএ