শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী

কে হচ্ছেন বায়তুল মোকাররমের খতিব?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ
বার্তা সম্পাদক

বছরের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে ৩০ ডিসেম্বর (সোমবার) ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে বড় রদবদল করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব নূরুল ইসলামকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয় এবং ভারপ্রাপ্ত ধর্ম সচিব আনিছুর রহমানকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

অন্যদিকে নানা নাটকীয়তার পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকেও দূনীতির দায়ে বিদায় নেন সামীম মোহাম্মদ আফজাল। তার স্থলে নিয়োগ দেয়া হয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারকে।

প্রায় একযুগ পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনে অবসান ঘটে সামীম মোহাম্মদ আফজাল অধ্যায়ের। দীর্ঘ ১১ বছর পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি পদে পরিবর্তন আনা হলো।

এরই ধারাবাহিকতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেও নতুন খতিব নিয়োগ দেওয়া হতে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এর প্রধান কারণ, জাতীয় মসজিদের বর্তমান খতিব অধ্যাপক মাওলানা সালাহউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে শয্যাশায়ী। এ কারণে তিনি আর ইমামতি করবেন না বলে জানিয়েছেন।

মাওলানা সালাহউদ্দিনের অনুপস্থিতিতে জুমার নামাজ পড়াচ্ছেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমামগণ। দীর্ঘদিন তার অনুপস্থিতি থাকার খবর গণমাধ্যমে ও সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়ে আসছে। মূলত এ কারণেই ইফা কর্তৃপক্ষ নতুন খতিব হিসেবে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বলে ধারণা অনেকের।

জানা গেছে, নতুন খতিব নিয়োগের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে। এ তালিকায় শীর্ষে আছেন মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির ও জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ির মুহতামিম আল্লামা মাহমুদুল হাসান ও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

এর বাইরে কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আযহার আলী আনোয়ার শাহ, গহরডাঙ্গা মাদরাসার মাওলান রুহুল আমিন নামও এসেছে এ তালিকায়।

সূত্রের দাবি, গুলশান সেন্ট্রাল আজাদ মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হাসানকে জাতীয় মসজিদের খতিব করা হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে গুলশানের মসজিদটিতে খতিবের দায়িত্ব পালনকারী এ আলেমের সঙ্গে প্রসাশনের লোকজনের সুসম্পর্ক ও ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে তার ‘ক্লিন ইমেজ’ বায়তুল মোকররমের খতিব হতে সহায়ক হতে পারে।

এদিকে নতুন খতিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত যাদের নাম আলোচনায় এসেছে তাদের মধ্যে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের নামও শীর্ষে রয়েছেন। দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহের দায়িত্ব পালন, জঙ্গিবিরোধী ফতোয়া ও জামাতবিরোধিতার কারণে তিনি সরকার মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। আলেম-ওলামা ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা না থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আনুকুল্য পেয়ে তিনিও নতুন খতিব হয়ে যতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর বাইরে মাওলানা আযহার আলী আনওয়ার শাহর নামও বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি কওমি মাদরাসায় গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞ আলেম হিসেবে পরিচিত। সুমধুর কোরআন তেলাওয়াত ও ব্যক্তিগতভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় তাকে খতিব করা হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও পরিবারের সদস্যরা আশাবাদী দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন।

এছাড়াও এ তালিকায় এগিয়ে আছেন আল্লামা শামসুল হক ফরীদপুরী রহ.-এর ছেলে মাওলানা রুহুল আমিন। মাওলানা রুহুল বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধী দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। এছাড়াও তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মানুষ। গত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী। এক্ষেত্রে সরকারের পছন্দে তিনিও থাকতে পারেন।

[caption id="attachment_175956" align="aligncenter" width="300"] বই কিনতে ক্লিক করুন[/caption]

এছাড়াও বর্তমানে বায়তুল মোকাররমে একজন সিনিয়র পেশ ইমাম ও পেশ ইমাম তিনজন দায়িত্বে রয়েছেন। সিনিয়র পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। পেশ ইমাম হিসেবে রয়েছেন মুফতি মাওলানা মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী, মাওলানা মুহাম্মদ এহসানুল হক জিলানী ও মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন কাসেম। এদের মধ্য থেকেও কাউকে নতুন খতিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

বায়তুল মোকাররমের খতিব হিসেবে কাকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে- এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সচিব মো: নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমার কাছে বায়তুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।

তবে সাধারণ মুসল্লিদের মতে, যেহেতু বাংলাদেশের জাতীয় মসিজদ বায়তুল মোকাররম এবং এখান থেকেই সারাদেশে ধর্মীয় বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং, এ মসিজেদ একজন যোগ্য ও তাকওয়াবান আলেমকে নিয়োগ দেওয়া হোক। যিনি সব ধরণের বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে জাতিকে ধর্মের সঠিক বার্তা দেবেন।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ