রকিব মুহাম্মদ
ইজতেমা ময়দান থেকে
দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উপস্থিতিতে ইবাদত, বন্দেগী, জিকির-আসকার আর আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখর টঙ্গীর তুরাগপাড়ের বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন শনিবার সকাল থেকেই তুরাগ তীরের ইজতেমা মাঠে লাখ লাখ মুসল্লির উপস্থিতিতে চলছে পবিত্র কুরআন-হাদিসের আলোকে বয়ান।
গত ৩ দিন ধরে ইজতেমা মাঠে সার্বক্ষণিক ইবাদতে মগ্ন রয়েছেন দেশ-বিদেশের হাজার হাজার আলেম-ওলামা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে ঈমান, আমল, আখলাক ও দীনের পথে মেহনতের ওপর আম বয়ান করছেন তারা। কনকনে শীত উপেক্ষা করে ইজতেমা ময়দানে হাজারো আলেমের উপস্থিতি এ মজলিসের মাহাত্মকে শতগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছিলেন মজলিস দাওয়াতুল হকের আমির ও জামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ির প্রিন্সিপাল আল্লামা মাহমুদুল হাসান। তার সঙ্গে দেশ-বিদেশের অনেক ওলামায়ে কেরাম দেখা করেন এবং ইলমি মুজাকারায় অংশ নেন।
আল্লামা মাহমদুল হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাকরাইল মারকাজ মসজিদের খতিব ও বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি ওবায়দুল্লাহ, মুফতি ওমর ফারুক ও রায়ভেন্ড মারকাজের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বি মুফতি শফিকুল ইসলাম বেঙলুর, মাওলানা আকবর শরীফ, মুফতি তাহের কুরাইশী। এসময় তারা দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত ও ইজতেমার কামিয়াবির জন্য মহিউস সুন্নাহর কাছে দোয়া চান।
এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের মধ্য থেকে মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল মালেক, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদী, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা শওকত হোসাইন প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দোয়া চান।
[caption id="attachment_175956" align="aligncenter" width="300"] বই কিনতে ক্লিক করুন[/caption]
গতকালের তশকিলে যাত্রাবাড়ি মাদরাসার চল্লিশ জন ফারেগীন ছাত্র, যারা এক বছরের জন্য তাবলিগের কাজে দেশের আনাচে-কানাচে ছুটছেন, তারাও আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে দেখা করেন। মোসাফাহ শেষে বাকি সময়টা তাবলিগের মেহনতে কাটানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করছেন শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আব্দুল হামীদ (মধুপুরের পীর), মাওলানা আরশাদ রাহমানী, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, শায়খ সাজিদুর রহমান, মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা ইয়াহইয়াহ মাহমুদ, মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, মুফতি ফয়জুল্লাহ (মাদানীনগর), মুফতি কেফায়তু্ল্লাহ আযহারী, মুফতি মাসউদুল করীম, মুফতি জাফর আহমদ (ঢালকানগরের পীর), মুফতি আবু সাঈদ, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম।
অন্যদিকে বিদেশী মেহমানদের মধ্যে তাবলিগের শূরা সদস্য ভারতের মাওলানা আহমদ লাট, পাকিস্তানের মাওলানা ইবরাহিম দেওলা, দারুল উলুম উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি আল্লামা মুফতি হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী, মাওলানা ফারুক (ভাই ফারুক), মাওলানা জুহায়েরুল হাসান, মাওলানা ইসমাইল গোদরা, পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক, মাওলানা খুরশিদ আলম, মাওলানা নওশাদ, মাওলানা হাসমত উল্লাহ, মাওলানা বখতে মুনির, মাওলানা শাহেদ প্রমুখ ময়দানে রয়েছেন।
এদিকে, লাখো মুসল্লি বয়ান, তাশকিল, তাসবিহ-তাহলিলে কাটাচ্ছেন। শনিবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে দেশ-বিদেশ থেকে আগত মুরুব্বিরা তাবলিগের ছয় উছুলের মধ্যে দাওয়াতে দীনের মেহনতের ওপর গুরুত্বারোপ করে বয়ান করছেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে শুরায়ী নেজামের বিশ্ব ইজতেমা। তবে এর আগেই বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকেই শুরু হয় তালিমি বয়ান। রবিবার (১২ জানুয়ারি) মোনাজাতের মাধ্যমে আলমী শূরার তাবলিগ জামাতের সাথীদের ইজতেমা শেষ হবে।
আরএম/