মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু চাঁদপুর হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহর সাফল্য বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত রিপনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত

দক্ষিণ কোরিয়ায় মুসলিমরা কেমন আছেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ লুৎফুর রহমান
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে>

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৫ সালের জাতীয় শুমারি অনুযায়ী অধিকাংশ মানুষের (৫৬.১%) কোনো ধর্মের সাথে সম্পর্ক নেই। কিন্তু এখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা খুব ভালো। অন্যান্য যেকোন উন্নত বিশ্ব থেকে অনেক ভাল বলা যায়।

এখানে ধর্ম পালনে কোন বাঁধা নেই। যে যার ধর্ম সুন্দরভাবে পালন করতে পারবে। আধুনিক দক্ষিণ কোরিয়াতে ধর্ম নিয়ে কোন প্রকার সহিংসতা হয়নি আজ পর্যন্ত। যেখানে অনেক উন্নত দেশও ধর্মীয় সহিংসতা থেকে রক্ষা পায়নি।

প্রায় ৪০ হাজার মুসলমানের বসতি দক্ষিণ কোরিয়ায়। এদের বেশিরভাগই কোরীয় যুদ্ধের সময়ে ধর্মান্তরিত এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার অধিবাসী। এছাড়া পূর্বে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রচুর অধিবাসী মধ্যপ্রাচ্যে চাকরির সুবাদে থাকত এবং সেখান থেকে তারা ইসলামের প্রতি উৎসাহিত হয়েছে।

দেশটির সর্ববৃহৎ মসজিদ সিউল সেন্ট্রাল মসজিদ যা সিউলের ইতেওয়ানে অবস্থিত। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে ছোটখাটো মসজিদ রয়েছে।এখানে অনেক জায়গায় নামাজঘর হয়েছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছোট আকারে নামাজঘর হয়েছে।

এখানে শব্দ দূষণের আইন অনেক কঠোর। তাই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে কোনোরকম উচ্চশব্দ করতে পারবে না। এটি শুধুমাত্র ধর্মপালন নয়, সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

বিংশ শতাব্দীর মধ্য সময় পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোরীয় জনগোষ্ঠী খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে এই হার কমতে থাকে এবং ২০১২ সালের এক সমীক্ষায় ১৫.৫ শতাংশের মতো নাগরিক নাস্তিকতাকেই ধর্ম হিসেবে উল্লেখ করে। ২০১৫ সালের সমীক্ষা অনুসারে, যুব সমাজের অন্তত ৬৫% শতাংশের বেশি জনগোষ্ঠী কোনো ধরনের ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত নয়।

যেসকল জনগোষ্ঠী ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত তাদের মাঝে প্রায় ১৯ শতাংশ প্রটেস্ট্যান্ট মতবাদের খ্রিস্টান। এছাড়াও ২৫.৫ শতাংশ বৌদ্ধ ও ৭.৯ শতাংশ ক্যাথলিক মতবাদের অনুসারী। খুবই অল্প সংখ্যক কোরীয় নাগরিক কনফুসীয় ধর্ম, ওন বৌদ্ধ মতবাদ, ছন-দো মতবাদ, দেসান জিনরি-হো মতবাদ মেনে চলে।

বৌদ্ধ ধর্মের আগমনের পূর্বে কোরীয়রা তাদের আদিবাসী সমাজে প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী ছিল।

কনফুসীয় ধর্মের বিস্তারে সেই সময় কোরীয় বৌদ্ধ ধর্ম এবং আদিবাসীদের মাঝে প্রচলিত শামান ধর্ম চাপা পড়তে থাকে। এই আমলে বৌদ্ধ ধর্মের ভিক্ষুদের উপর নিপীড়ন ছাড়াও অনেক বৌদ্ধ মন্দিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

কিছু কিছু অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মের ভিক্ষু ও প্রচারকদের শহরে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জ্ঞাপনের পাশাপাশি তাদের পাহাড়ে নির্বাসিত করা হয়। উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এসকল নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে।

উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এসে চোসান রাজ্য রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিগতভাবে ধ্বসে যেতে থাকে। বুদ্ধিজীবীরা এই সময়ে জাতিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। এরূপ বেহাল অবস্থায় পশ্চিমা প্রটেস্ট্যান্ট মতবাদের খ্রিস্টান মিশনারিরা কোরীয়দের মাঝে সমাধান হয়ে উদয় হয়।

১৭শ শতাব্দী থেকেই কোরিয়ায় খ্রিস্টান ধরমে অস্তিত্ব ছিল কিন্তু ১৮৮০ সাল থেকে বিপুল পরিমাণ মিশনারীদের আগমনে নাটকীয় পরিবর্তন আসে কোরীয় সমাজে এরকম মিশনারীরা বিদ্যালয়, হাসপাতাল এবং প্রকাশনা সংস্থা স্থাপন করে। এমনকি রাজ পরিবারও খ্রিস্টান ধর্মকে সমর্থন জানায়।

হিন্দু ধর্ম দক্ষিণ কোরিয়ার ভারতীয় ও নেপালী অধিবাসীদের মাঝেই মূলত টিকে আছে। কোরিয়ার রাজধানী সিউল অঞ্চলে দুইটি হিন্দু মন্দির রয়েছে।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া।

-এটি/এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ