আওয়ার ইসলাম: ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন-এর (বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠাতা আমীর আপোষহীন ধর্মীয় আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক নেতা মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মাদ ফজলুল করীম- শায়েখ চরমোনাই রহ.-এর ১৩ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (২৫ নভেম্বর)।
মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মাদ ফজলুল করীম- শায়েখ চরমোনাই রহ. ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর সকাল ৯টায় লাখো কোটি ভক্ত মুরীদদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চরমোনাই বার্ষিক মাহফিল শুরুর ১দিন পূর্বে চরমোনাই’র নিজ বাসভবনে জিকিররত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
সৈয়দ ফজলুল করীম ছাত্র জীবনে নাছিরে মিল্লাত নামে একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে ছাত্রদেরকে সংগঠিত করে জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেন। এছাড়া দীনের দাওয়াতের পাশাপাশি ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র জীবনেই পিতার সাথে নেজামে ইসলামী পার্টির রাজনীতিতে স্বক্রিয় হন।
তিনি হাফেজী হুজুরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে দেশবরণ্য ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন।
মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ঐ সংগঠনের আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভ্রান্ত আকিদা ও নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আপোষহীন আন্দোলন-সংগ্রামে স্বক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ইসলামী দল ও সংগঠনের ঐক্যের ব্যাপারে তিনি ছিলেন আন্তরিক।
তিনি বিএনপি সরকারের ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্লাটফর্ম সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়কারী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন সফলতার সাথে।
তিনি আরাফাতের ময়দানে এক ভাষণে বর্তমান সাম্রাজ্যবাদের রাবার ষ্ট্যাম্প জাতিসংঘের পরিবর্তে মুসলিম দেশগুলোকে মিলে ইসলামী জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার জন্য আহবান জানান। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ আমলে তিনি ফতোয়া বিরোধী রায় বাতিলের দাবীতে কাফনের কাপড় নিয়ে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলেন।
শায়েখ চরমোনাই রহ. তার সমস্ত জীবন ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত করে গেছেন। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ সারা বছরব্যাপী দেশের গ্রাম-গঞ্জে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি তিনি দেশের গন্ডি পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপসহ এশিয়ার সকল রাষ্ট্র সফর করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পীর সাহেবের অগনিত ভক্ত মুরিদ রয়েছে।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ অফিস মিলনায়তনে এক দুআ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
আরএম/