আওয়ার ইসলাম: সাহু সিজদা কী, কখন, কোন ধরনের ভুলের জন্য কিভাবে সাহু সিজদা দিতে হয় তা অনেকেই জানেন না। অথচ এটা প্রতিটা মুসলমানের জন্য প্রয়োজন।
নামাজে কিছু বিষয় আছে যেগুলো ভুলে হলে নামাজ শেষে দুটি অতিরিক্ত সিজদা আদায় করতে হয়। এ সিজদাকেই সাহু সিজদা বলা হয়। শরয়ি দৃষ্টিকোণে এটি ওয়াজিব।
যেসব কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব: ক. নামাজে কোন ফরজ বা ওয়াজিব আদায়ে বিলম্ব হলে। খ. কোন ফরজ দুইবার আদায় হলে। গ. নামাজে কোন ফরজ আগ-পর করে ফেললে। ঘ. কোন একটি বা কয়েকটি ওয়াজিব বাদ পড়লে। ঙ. কোন ওয়াজিব পরিবর্তন করলে। (নাজমুল ফাতাওয়া ২/৪৫৪)
সাহু সিজদা করার উত্তম পদ্ধতি হলো, শেষ রাকআতে তাশাহহুদ পড়ে ডান দিকে সালাম ফিরাবে, তারপর নিয়ম মত দুটো সিজদা করে আবার তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়ে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, عن علقمة: أن عبد الله سجد سجدتي السهو بعد السلام، وذكر أن النبي ﷺ فعله
অর্থ: আলকামা থেকে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. সাহু সিজদা সালামের পরে করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, নবী সা. এরূপ করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪৪৭৫)
নামাজের ওয়াজিব ১৪টি: ১. প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতিহা পূর্ণ পড়া।
৩. ফরজের প্রথম দুই রাকাতকে কিরাতের জন্য নির্দিষ্ট করা।
৫. নামাজের সব রুকন ধীরস্থিরভাবে আদায় করা অর্থাৎ রুকু, সিজদা ও রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এবং দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসে কমপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ দেরি করা।
৬. প্রথম বৈঠক করা (অর্থাৎ তিন অথবা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের দুই রাকাতের পর বসা)।
৮. প্রতি রাকাতের ফরজ ও ওয়াজিবগুলোর তারতিব বা ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা।
১০. বিতর নামাজে তৃতীয় রাকাতে কিরাতের পর কোনো দোয়া পড়া। অবশ্য দোয়া কুনুত পড়লে ওয়াজিবের সঙ্গে সুন্নতও আদায় হয়ে যাবে।
১২. দুই ঈদের নামাজে দ্বিতীয় রাকাতে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলার পর রুকুতে যাওয়ার সময় ভিন্নভাবে তাকবির বলা।
(এই তাকবিরটি অন্যান্য নামাজে সুন্নত)
১৩. ইমামের জন্য জোহর, আসর এবং দিনের বেলায় সুন্নত ও নফল নামাজে কিরাত আস্তে পড়া। আর ফজর, মাগরিব, এশা, জুমা, দুই ঈদ, তারাবি ও রমজান মাসের বিতর নামাজে কিরাত শব্দ করে পড়া।
মনে রাখতে হবে, আস্তে পড়ার অর্থ মনে মনে পড়া নয়। কেননা এতে নামাজ শুদ্ধ হয় না; বরং আওয়াজ না করে মুখে উচ্চারণ করে পড়া জরুরি)।
১৪. সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা।
আরএম/