সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

অন্ধত্ব জয় করে কুরআনের হাফেজা হলেন তুর্কি নারী যায়নাব ইসরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বেলায়েত হুসাইন ।।

যায়নাব ইসরা। ৩১ বছর বয়সী তুর্কি নারী। জন্মগত-ই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তুরস্কের হাতায় প্রদেশের মধ্যবিত্ত এক পরিবারে তার জন্ম। শৈশবে যায়নাবের একাডেমিক পড়াশোনার সুযোগ হয়নি। অন্ধ হওয়ায় ঘরে বসেই জীবন অতিক্রম করতে হয় তার। এসময় বাড়ির অন্যান্যদের থেকে খুব আগ্রহ নিয়ে কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত শুনতেন তিনি। এভাবে কুরআনের কিছুকিছু অংশ মুখস্থও করতে সমর্থ হন যায়নব।

পরিবারেরে মানুষ কুরআনের প্রতি যায়নবের আলাদা টান ও আকর্ষণ উপলব্ধি করলেন। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যয়নবকে একটি মাদরাসায় ভর্তি করবেন। গত সপ্তাহে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনাদুলু এজেন্সি প্রকাশ করেছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যায়নাবের হাফেজা হওয়ার অসামান্য কীর্তিগাঁথা। আনাদুলুর সাক্ষাৎকারে যায়নাব বলেন:-

'শৈশবে যখন বাড়িতে সময় কাটাতাম তখনই আমি কুরআনের তেলাওয়াত শুনতে খুব পছন্দ করতাম। আমার মনে দুর্দান্ত আকর্ষণ ছিল সম্পূর্ণ কুরআনে কারীম হিফজ করার কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়াতে সেটি সম্ভব হচ্ছিলো না। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঘরের চৌহদ্দিতেই আমার জীবন কেটেছে। আমি বড়দের তেলাওয়াত শুনতাম অত্যন্ত আগ্রহভরে এবং মনোযোগের সঙ্গে। অবিভাবকরা আমার মধ্যে কুরআনের প্রতি অসীম ভালোলাগার ব্যাপারটি অনুভব করলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে মাদরাসায় ভর্তি করাবেন'।

'চার বছর আগে তারা আমাকে একটি মেয়েদের মাদরাসায় নিয়ে গেলেন সেখানে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে। আমি ওই মাদরাসার হিফজ বিভাগে ভর্তি হলাম। আর এক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করলেন মাদরাসার একজন শিক্ষক। ২০১৭ সালে আমি প্রতিষ্ঠানিকভাবে কুরআনে কারীম মুখস্থ করা শুরু করি, তবে আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছিলো না পড়াশোনায়। ভর্তির সময় যিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন সেই শিক্ষক সবসময় আমার খেয়াল রাখতেন। তিনি আমার হিফজের অগ্রগতির জন্য দারুণ একটি কৌশলের আশ্রয় নিলেন; আমাকে কিনে দিলেন একটি টেপরেকর্ডার ও এয়ারফোন'।

মাদরাসায় এবং বাড়িতে সবজায়গায় আমি রাতদিন টেপরেকর্ডার চালু করে তেলাওয়াত শুনতাম। এভাবে আমার দারুণ উন্নতি হচ্ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ! টেপরেকর্ডারের কল্যাণেই অল্প সময়ে মাত্র আড়াই বছরে আমি সম্পূর্ণ কুরআনে কারীম মুখস্থ করে হাফেজা হওয়ার গৌরব অর্জন করতে সমর্থ হই। তবে আমার এই সাফল্যের পিছনের মূল কারণ টেপরেকর্ডার নয়; বরং কুরআনে কারীমের প্রতি অসামান্য ভালবাসা ও মনের মধ্যে সুপ্ত থাকা হাফেজা হওয়ার দুর্দান্ত আকাঙ্খা। আমার জন্য যারা অনেক কষ্ট করেছেন পরিবার এবং আমার প্রিয় শিক্ষক তাদের সবাইকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে শুকরান অফুরান।

আনাদুলুর মাধ্যমে আমি সবার প্রতি আহবান জানাই, আপনাদের উচিত দৃষ্টিশক্তির জন্য সবসময় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা। কেননা, এটি মহান রবের পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ নেয়ামত। আমি জন্মগতভাবে অন্ধ হয়েও হাফেজা হয়েছি, আর এটা আপনাদের জন্য আরও সহজ বিষয়। আপনারা কুরআন পড়ুন এবং অন্তরে কুরআনের প্রতি মুহাব্বাত সৃষ্টি করুন। হাফেজ হয়ে সুস্থতা প্রাপ্তির নেয়ামত স্বরূপ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করুন। কুরআনে কারীমের হাফেজ হওয়া স্রষ্টার পক্ষ থেকে সৃষ্টির প্রতি বিরাট বড় পুরস্কার!

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ