আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে যাচাইকৃত রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার। তাদের জাতীয় যাচাইকরণ কার্ড দেওয়া হবে যেটাকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের দেওয়া ‘গ্রিন কার্ড’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন মিয়ানমারের মন্ত্রী।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক ‘সাধারণ বিতর্ক’-এর পঞ্চম দিনে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, উত্তর রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে মিয়ানমার। বাংলাদেশের সঙ্গে ২০১৭ সালের নভেম্বরে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে প্রত্যাবাসন করা হবে।
মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে বলেন, এখন আমাদের অগ্রাধিকার হলো প্রত্যাবাসন দ্রুত করা এবং যাচাই-প্রত্যাশীদের জন্য আরও বেশি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। নাগরিকত্ব কার্ড পেতে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে প্রত্যাবর্তনকারীদের। রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত বাস্তুচ্যুত লোকদের আলাদা আইনি মর্যাদা রয়েছে। যারা নাগরিকত্বের জন্য যোগ্যতা অর্জন করবেন তাদের নাগরিকত্ব কার্ড দেওয়া হবে। বাকিরা জাতীয় যাচাইকরণ কার্ড পাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের ‘গ্রিন কার্ড’ এর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের দিতে চাওয়া কার্ডের তুলনা করেন তিনি।
মিয়ানমারের মন্ত্রী আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ২০১৬ -১৭ সালে আরএসএ (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত হিংসাত্মক হামলার ফলেই বর্তমান মানবিক সংকট সৃষ্টিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। এআরএস-এর হত্যাকাণ্ড ও হুমকিসহ বিভিন্ন বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও প্রায় তিন শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে এসেছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে।
বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বিশ্বস্ততার সঙ্গে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় এটি। রাখাইন রাজ্যের ঘটনার জন্য জবাবদিহিতা সম্পর্কে সোয়ে বলেন, বর্তমানে একটি সামরিক তদন্ত চলছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা শুরু হওয়া গণহত্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়।
আরএম/