আওয়ার ইসলাম: কোনো কোনে মানুষের ধারণা, বিদায়ের সময় সালাম-মুসাফাহা করা সুন্নতের খেলাফ। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। হাদীস শরীফে বিদায়ের সময় সালাম-মুসাফাহা করার কথা প্রমাণিত আছে।
সাক্ষাতের সময় যেমন সালাম দেয়া সুন্নত, তেমনি বিদায়ের সময়ও সালাম দিয়ে বিদায় নেওয়া সুন্নত। হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমাদের কেউ কোনো মজলিসে পৌঁছবে তখন সালাম দিবে। যদি বসতে চায় বসে পড়বে। এরপর যখন মজলিস ত্যাগ করবে তখনও সালাম দিবে। কারণ প্রথম সালাম দ্বিতীয় সালাম অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ উভয়টির গুরুত্ব সমান। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭০৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২০৮
আরেকটি বর্ণনায় এভাবে এসেছে, নবীজী একটি মজলিসে ছিলেন, এক ব্যক্তি পাশ দিয়ে অতিক্রমের সময় বলল, আস সালামু আলাইকুম। নবীজী বললেন, দশ নেকি।... এক ব্যক্তি সালাম দেয়া ছাড়া উঠে গেল। তখন নবীজী বললেন, সে মনে হয় ভুলে গেছে। যখন তোমাদের কেউ কোনো মজলিসে পৌঁছবে তখন সালাম দিবে। যদি উক্ত মজলিসে বসতে চায় বসবে। এরপর যখন মজলিস থেকে উঠে যাবে (বিদায় নিবে) তখনও সালাম দিবে। কারণ প্রথম সালাম দ্বিতীয় সালাম অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ উভয়টির গুরুত্ব সমান। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৯৮৬
তেমনি বিদায়ের সময় মুসাফাহা করাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কাযাআ রাহ. বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.-এর নিকট ছিলাম। যখন সেখান থেকে ফিরে আসবো তখন তিনি আমাকে বললেন, থামো, আমি তোমাকে সেভাবে বিদায় দিবো যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিদায় দিয়েছেন। তখন তিনি আমার হাত ধরে মুসাফাহা করলেন এরপর বললেন,
أَسْتَوْدِعُ اللهَ دَيْنَكَ، وَأَمَانَتَكَ، وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ.
-আসসুনানুল কুবরা, নাসায়ী, হাদীস ১০২৭০
আর নিম্নোক্ত হাদীসও প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাউকে বিদায় দিতেন তখন তার হাত ধরতেন। অতপর ঐ ব্যক্তি হাত টেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি তার হাত ছাড়তেন না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৪২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/৪৯১
সুতরাং বিদায়ের সময় সালাম-মুসাফাহাকে সুন্নতের খেলাফ বলার কোনো অবকাশ নেই।
[রাজধানীর মারকাযুদ দাওয়া আল ইসলামিয়া থেকে প্রকাশিত মাসিক আল কাউসারের সৌজন্যে]
আরএম/