সুফিয়ান ফারাবী
বিশেষ প্রতিবেদক
ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন, ইত্তেহাদুল ওয়ায়েজীন, মুফাসসির পরিষদ ইত্যাদি নামে সারাদেশে ওয়ায়েজদের সংগঠন রয়েছে। সংগঠনগুলো বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বক্তাদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নানা ব্যানারে একত্রিত হয়ে ওয়াজ মাহফিল ও বক্তাদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে তারা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেরও ডাক দিচ্ছে। এছাড়া নিজেদের মধ্যে পরস্পর ভাবনাবিনিময়ের মাধ্যমে আত্মউন্নয়নেরও পথ খুঁজছে। ওয়ায়েজদের শীর্ষ সংগঠগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কারণ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কর্মপন্থা সম্পর্কে এসব তথ্য সামনে উঠে এসেছে।
ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ। এ সংগঠনটি দেশের সকল ওয়ায়েজদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে এসে মুরুব্বীদের তত্ত্বাবধানে বক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছে। মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা মামুনুল হক ও মাওলানা হাসান জামিল এ সংগঠনটির উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুফতী উমর ফারুক যুক্তিবাদী ও কেন্দ্রীয় মহাসচিব হিসেবে আছেন মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম শিবপুরী।
ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী বলেন, আমরা এখন মাহফিলের মঞ্চে বিভিন্ন রকমের কমেডি দেখি, যা ইসলাহী মজলিসে অশোভনীয়। বয়ানের মূল উদ্দেশ্য মানুষের ইসলাহ, ইসলামের ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা। কিন্তু মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো ও কৌতুকের রঙ্গমঞ্চ তৈরি করা মাহফিলের উদ্দেশ্য নয়। অথচ, এসব বর্জনীয় বিষয়ের দিকে লক্ষ্যই করছেন না বক্তারা। এ সকল বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশের মুরুব্বী আলেমদের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশে গঠিত হয়েছে ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ।
তিনি জানান, সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন সময়ে দিনব্যাপী বা মাসব্যাপী কর্মশালার মাধ্যমে আহলে জবানদেরকে আহলে দিল হিসেবে গড়ে তোলার এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ। আমরা কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে বক্তাদের তরবিয়ত ও ইসলাহের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করতে পারছি। এতে করে বক্তা ও শ্রোতা উভয়ই লাভবান হচ্ছে।
জাতীয় ওয়ায়েজিন পরিষদ। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে সংগঠনটির পথচলা শুরু হয়। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মুজিবুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আছেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
সংগঠনের সহ-সভাপতি মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী জানান, মানব কল্যাণ ও মহাগ্রন্থ আল কুরআনের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া, সাধারণ মানুষদের সচেতন করে তোলার মাধ্যমে তৃণমূল থেকে সকল প্রকার শিরক-বেদয়াত দূর করার লক্ষ্যে জাতীয় ওয়ায়েজিন পরিষদ গঠিত হয়েছে। ঈমান ও নেক আমলের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব- একথা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি।
জাতীয় মুফাসসির পরিষদ। পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম বিলালী ও যুগ্ম মহাসচিব- মাওলানা রুহুল আমীন। সংগঠনটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা মিডিয়ায় সংগঠন সম্পর্কে কথা বলতে রাজি হননি।
এর কারণ হিসেবে সংগঠনের কর্মী দেলোয়ার হোসাইন হুজাইফি বলেন,‘ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ একটি জাতীয় পর্যায়ের সংগঠন। যেহেতু ইত্তেফাকুল ওয়ায়েজীন ও জাতীয় ওয়ায়েজিন পরিষদ বক্তব্য প্রদান করেছে তাই আমরা সেখানে বক্তব্য দিতে পারিনা।’
‘প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও বিভাগে আমাদের কমিটি রয়েছে। সুতরাং আমরা একই নিউজে বক্তব্য দিতে রাজি নই। বিষয়টি নিয়ে আমাদের বড়দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
আরএম/