রশীদ আহমদ: নিউইর্য়কের অতি প্রাচীনতম মসজিদ ওজনপার্কের মসজিদ আল আমানের আওতাধীন দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "শাহজালাল একাডেমী" এর হিফজ বিভাগের বার্ষিক অনুষ্ঠান ও গ্র্যাজুয়েশন গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
বাদ মাগরিব অনুষ্ঠিত উক্ত গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ আল আমানের সভাপতি কবীর আহমদ চৌধুরী। শাহজালাল একাডেমীর প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর ও মসজিদের খতিব মাওলানা শোয়াইব জামালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআনে হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন শেখ সিদ্দিকী ও ক্বারী আহমদ হোসাইন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বয়ান করেন, বাংলাদেশ থেকে আগত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাদানী একাডেমী নিউইয়র্ক-এর সভাপতি অধ্যাপক মুহিব্বুর রহমান,মসজিদ আল আমানের প্রাক্তন ইমাম ও খতিব মুফতি মুহাম্মদ হাফিজুল্লাহ,দারুস সালাম মসজিদ জ্যামাইকার ইমাম ও খতিব মাওলানা আবদুল মুকীত ও দারুল কুরআন ও সুন্নাহর মুহাদ্দিস মুফতি হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাহজালাল একাডেমীর শিক্ষা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর আনোয়ার হোসেন খান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মসজিদ আল আমানের প্রাক্তন সভাপতি সামছুদ্দীন সোনাই ও সেক্রেটারি খলীল আহমদ। অভিভাবকদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন আবদুল ওয়াহাব, আতিকুর রহমান ও তাহির আলী।
[caption id="attachment_169583" align="alignnone" width="500"] মাঝখানে মুহাম্মদ ফাহিম মোর্শেদ ও মুহাম্মদ আবু জাফর[/caption]
আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আতাউর রহমান, ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মসজিদ আল আমানের প্রাক্তন সেক্রেটারি মাসুক আহমদ, বর্তমান সেক্রেটারি খলীল উদ্দিন আহমদ,প্রাক্তন ট্রেজারার কামাল উদ্দিন, বর্তমান ট্রেজারার এনাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন সহ অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক উলামায়ে কেরাম, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং অভিভাবক সহ কমিউনিটির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সফলতার সাথে দুইজন শিক্ষার্থী হিফজ সম্পন্ন করে গ্র্যাজুয়েশন করায় তাদেরকে পাগড়ি ও পুরস্কার হিসেবে ওমরাহ পালনের জন্য দুইটি প্যাকেজ প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে পুরো বছরে সেরা অন্য দুইজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী বলেন, ইসলামকে জানা ও বুঝার জন্য ভাল আলেমের শরণাপন্ন হতে হবে। আলেম-ওলামা ছাড়া সঠিক দীন শিক্ষা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, গুগলমার্কা আলেমদের থেকে আমাদের সমাজ ও কমিউনিটিকে বাঁচাতে হলে শাহজালাল একাডেমীর মতো দীনি মাদরাসাগুলোতে আপনাদের সন্তানদের বেশি বেশি পাঠাতে হবে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।
কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, সবাইকে বড় আলেম-মুফতি হওয়ার প্রয়োজন নয় বরং ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো জানা সকলের জন্য ফরজ বা অত্যাবশ্যকীয়। তাই সবাইকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে হবে এবং এ ব্যাপারে আরো বেশী মনোনিবেশ দিতে হবে। কেননা ঐ কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানই পারে মানুষকে সঠিক ও সত্য পথ দেখাতে।
সভাপতি কবীর চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ইসলামের মৌলিক শিক্ষার জন্য আফটার স্কুল প্রোগ্রামে এবং দীনের পরিপূর্ণ জ্ঞানার্জনের আমাদের শাহজালাল একাডেমীতে সন্তানদেরকে ভর্তি করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
উপস্থিত অভিভাবক ও মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সকলের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে আমাদের এরকম অনুষ্ঠানে আরো বেশী সংখ্যক হাফিজ গ্র্যাজুয়েশন করতে সক্ষম হবে।
অভিভাবকরা তাদের বক্তৃতায় বলেন, মুসলমান হিসেবে সন্তানদের ইসলামী শিক্ষা দেওয়া অবশ্যই জরুরি।তাই তারা শাহজালাল একাডেমীতে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠান শেষে একাডেমী কতৃর্পক্ষ গ্র্যাজুয়েশনে আগত সবাইকে রাতের খাবার পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, মসজিদ আল আমানের আওতাধীন শাহজালাল একাডেমী নামক দীনি প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে মুহাম্মদ ফাহিম মোর্শেদ ও মুহাম্মদ আবু জাফর নামক দুইজন শিক্ষার্থী হিফজ শেষ করে উক্ত অনুষ্ঠানে সনদ গ্রহণ করেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী (ছেলে-মেয়ে) ইলম অর্জন করছেন।
আরএম/