বেলায়েত হুসাইন ।।
প্রাচীনকাল থেকেই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে মদিনা মুনাওয়ারাহ্ সুপ্রসিদ্ধ। জ্ঞান এবং জ্ঞানীদের আতুড়ঘর মদিনা মুনাওয়ারার আদিকাল থেকেই ইলমের রৌশনি বিতরণ করার সুনাম রয়েছে। মদিনায় কিতাবপত্রকে খুব যত্ন করা হয়। পবিত্র এই নগরবাসীর কিতাবের সঙ্গে এতোটাই বন্ধুত্ব যে, মদিনাতে অন্তত ১৫০টি পাঠাগার এখনো দিব্যমান। জ্ঞানপিপাসু লোকেরা এখানে আসেন তাদের জ্ঞান-তৃষ্ণা নিবারণ করতে।
সৌদি-প্রকৌশলী হাসান তাহির আল-আরাবিয়া ডটনেটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মদিনা মুনাওয়ারার ইতিহাস নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। স্বভাবতই মদিনার প্রাচীন ও ঐতিহাসিক পাঠাগারের আলোচনাও উঠে এসেছে তার সাক্ষাৎকারে।
তিনি বলেছেন, মদিনা মুনাওয়ারাহতে পাঠাগারের সংখ্যা অনেক। বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য যেমন আলাদা পাঠাগার রয়েছে, তেমনি সাধারণের জন্যও রয়েছে ভালোসংখ্যক পাঠাগার। সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের জন্য মদিনার পাঠাগারের খুব নামডাক! তবে এখানের অধিকাংশ পাঠাগারই নিবেদিতপ্রাণ কিছু মানুষের নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
হাসান তাহির জানান, মদিনা মুনাওয়ারাহতে অন্ততপক্ষে ১৫০ টি পাঠাগার রয়েছে--শ্রেণিবিন্যাস করলে এগুলোকে তিন স্তরে ভাগ করা যায়; সরকারি পাঠাগার, বেসরকারি পাঠাগার এবং বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত পাঠাগার।
তিনি জানান, ব্যক্তি মারফতে পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা, এটা মদিনা মুনাওয়ারাহর পুরনো ঐতিহ্য। কোনো বিদ্বান ব্যক্তির অবদানে পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, সামাজিক সংস্থা কতৃক পাঠাগার নির্মাণ, মহান মনীষীর স্মৃতিচারণে পাঠাগার নির্মাণ অথবা বড় বড় লেখকদের বইয়ের সমগ্র নিয়ে পাঠাগার-আয়োজনের রীতি মদিনা মুনাওয়ারাহর সংস্কৃতির অংশ।
হাসান তাহিরের মতে, সরকারি পাঠাগারসমূহ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী এবং বইপোকাদের অধ্যয়নের সুবিধার্থে অন্যান্য পাঠাগার প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়। এসব পাঠাগারের নির্মাণব্যয় বহন করেন মূলত যুবরাজ, মন্ত্রী এবং সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় লোকেরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৩৯১ হিজরি সনে মসজিদে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দক্ষিণ দিকে একটি সরকারি পাঠাগার নির্মাণ করে সৌদি রাজকীয় কতৃপক্ষ; বাদশাহ ফয়সাল এই পাঠাগারের উদ্বোধন করেন।
হাসান তাহির জানান, মদিনায় এখন বেসরকারি পাঠাগারের সোনালি দিন; দিনদিন নতুন নতুন বইয়ের সমাবেশ পাঠাগারের জৌলুশপূর্ণ ভাবগাম্ভীর্য আগের তুলনায় বাড়িয়ে তুলছে। জায়গা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। মদিনাবাসীর বইপ্রীতি থেকেই আমরা নগরীর মান-মর্যাদা নির্ণয় করতে পারি। মসজিদে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আশপাশেই একাধিক প্রসিদ্ধ পাঠাগার রয়েছে- শায়েখ মুহাম্মাদ আল-খাত্তানী পাঠাগার, মাস্টার হাবিব পাঠাগার এবং শায়েখ ইয়াসিন পাঠাগার উল্লেখযোগ্য!
আরএম/