আবদুল্লাহ তামিম: জম্মু ও কাশ্মীর হল ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল যা এতদিন সতন্ত্র রাজ্য ছিলো। কিন্তু এই অঞ্চলটি প্রধানত হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত।
ভারতের এই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলটির দক্ষিণে ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও পাঞ্জাব রাজ্য দুটি অবস্থিত। জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তরে পাক-অধিকৃত গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চল ও পূর্বে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ অবস্থিত। এই অঞ্চলের পশ্চিমে ও উত্তরপশ্চিমে লাইন অব একচুয়াল কন্ট্রোলের ওপারে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর গিলগিত-বালতিস্তান অবস্থিত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চালিত ভারতের সরকার সংসদের উভয় কক্ষে ব্যাপক সমর্থন নিয়ে ভারতীয় সংবিধানের জম্মু ও কাশ্মীর এর বিশেষ মর্যাদা ধারা ৩৭০ ও ধারা ৩৫ক,৫ই আগষ্ট ২০১৯ এ রদ করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরী করে,যথা জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ।
কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আজ ৭২ বছরে কাুশ্মিরের ১৪ ঐতিহাসিক ঘটনা আলোচনায় আসছে।
১৯৪৭-১৯৪৯ : ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে হিমালয় রাজ্য কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। পুরো ভূখণ্ডের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দেশ দু’টি। ১৯৪৯ সালে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান।
১৯৫৩: জম্মু-কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহকে বরখাস্ত করে কারাবন্দি করে ভারত। ১১ বছর তাকে কারাগারে রাখা হয়। পরে ১৯৭৫ সালে রাজ্যটির প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি ক্ষমতায় ফেরেন।
১৯৫৭: জম্মু-কাশ্মীর ইন্ডিয়ান ইউনিয়নের বিশেষ মর্যাদা পায় এবং সংবিধান কার্যকর করা হয়।
১৯৬৫-৬৬: কাশ্মীরের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত-পাকিস্তান। পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় কোনো সমাধান ছাড়াই যুদ্ধ শেষ হয়।
১৯৭১-৭২: দীর্ঘ বিরোধের জেরে অবশেষে ভারত-পাকিস্তান সিমলা চুক্তি সম্পাদন করে। এই চুক্তি অস্ত্রবিরতি লাইন নিয়ন্ত্রণরেখা নামে পরিচিতি পায়।
১৯৮৪: গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা মকবুল ভাটকে ভারতের কারাগোরে ফাঁসি দেয়া হয়।
১৯৮৯-৯০: ভারতীয় শাসন অমান্য করে এবং এর বিরুদ্ধে কাশ্মীরে বিদ্রোহ শুরু হয়। এতে কাশ্মীরে ভারত সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে।
১৯৯৯: পাকিস্তান কাশ্মীরের কার্গিল সেক্টরে অভিযান চালায়। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ছয় সপ্তাহ যুদ্ধ হয়। এতে দুই পক্ষের প্রায় এক হাজার সেনা মারা মারা যায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে যুদ্ধ বন্ধ হয়।
২০০১-২০০৩: কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আগ্রায় দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীদের সম্মেলনে সঙ্কটের সাময়ীক অবসান ঘটে।
২০০৮: হিন্দুদের বার্ষিক তীর্থযাত্রার জন্য কিছু জমি দেয়ার পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকার। এতে ভারতবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ফলে ওই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।
২০১০: ভারতীয় সেনাদের গুলিতে তিন বেসামরিক লোক নিহত হয়। ঘটনার জের ধরে রক্তাক্ত বিদ্রোহ শুরু হয়। পরে শতাধিক বিক্ষোভকারী মারা যায়।
২০১৬: বিদ্রোহী এক নেতাকে হত্যার কারণে কাশ্মীরে কয়েক মাস বিক্ষোভ চলে। এতে কয়েকশ’ মানুষ নিহত হন। সেনাঘাঁটিতে হামলায় ১৮ জওয়ান নিহত হন।
২০১৯: এক কাশ্মীরি তরুণের আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ ওই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার জেরে পাকিস্তানের বালাকোটে বোমা হামলা চালায় ভারত।
২০১৯: ভারতের সংবিধানে কাশ্মীরকে দেয়া বিশেষ সুবিধা ও মর্যাদা বাতিল করে মোদি সরকার।
-এটি