আওয়ার ইসলাম: কাতারের রাজধানী দোহায় সরকারি কর্মকর্তাসহ তালেবান ও প্রভাবশালী আফগানদের দুই দিনের আন্তঃআফগান সম্মেলন মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত ওই বৈঠকে অংশ নেয়া সব পক্ষ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়।
উভয় পক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। রাষ্ট্রীয় স্থাপনা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও জনবহুল এলাকায় হামলা চালাবে না তালেবান। অন্যদিকে, তালেবানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রতি দিয়েছে আফগান সরকার।
তালেবান বলছে, এ সম্মেলন আফগান সরকারেরর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক না হলেও আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা হলে সব ধরনের হামলা থেকে বিরত থাকবে।
তালেবান মুখপত্র সুহাইল শাহিন বলেন, এটা কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় নয়। অনানুষ্ঠানিক এ আলোচনায় দুই পক্ষই তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছে। সাধারণ মানুষের প্রাণহানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছি আমরা। এর আগে, মস্কো সম্মেলনে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারেরর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হলেই বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
সম্মেলনের ফলাফল নিয়ে ইতিবাচক আফগান সরকারের মনোভাবও। তালেবান প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে বলে আশাবাদী তারা।
আফগানিস্তান শান্তি পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান নাদির নাইম বলেন, আমরা মনে করি, সবার আগে তালেবানকে তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান শান্তিচুক্তির খুব কাছাকাছি চলে আসছে। সঙ্কট সমাধানে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি আমরা। এর বাস্তবায়ন এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।
তাছাড়া, দু’পক্ষই মানুষকে শ্রদ্ধা করার পাশাপাশি তাদের মর্যাদা রক্ষা এবং জান-মালের সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজতে সোমবার কাতারের দোহায় তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে বসে দেশটির রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ৫০ জনে প্রতিনিধি।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের ক্ষমতাচ্যুত করে। আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসন শুরুর পর দেশটিতে তালেবান এখন সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক জায়গা তালেবানের দখলে রয়েছে।
-এএ