আওয়ার ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী বলেন, গত ২০১৩ সালে শিক্ষাবোর্ডের কমিটি পরিবর্তনের পর শিক্ষার আধুনিকায়নের নামে এমন একটি বাতিল বিষয়বস্তু পাঠ্যবইয়ে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যেটা নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণার প্রতি উদ্দীপ্ত করে পাঠককে আল্লাহর অস্তিত্ব, পরকাল ও ধর্মের প্রতি অবিশ্বাসী এবং ভোগবাদের প্রতি মোহাবিষ্ট করে তুলে। আর সেটা হচ্ছে, নবম-দশম শ্রেণী থেকে ধারাবাহিকভাবে মাস্টার্স শ্রেণী পর্যন্ত “বিবর্তন” বিষয়কে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করণ।
আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত "পাঠ্যবইয়ে ডারউইনের নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণার'বিবর্তনবাদ'" অন্তর্ভূক্ত করার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ধর্মীয় ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ডারউনের মতবাদ ভুল উল্লেখ করে আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী বলেন,বিবর্তনবাদের শিক্ষা কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই যে গুরুতর আপত্তিকর তা নয়, বরং পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ ডক্টরাল বিজ্ঞানী বিবর্তনবাদের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা নিশ্চিত করেছেন, পৃথিবীতে কখনো এভাবে বিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ২০১৩ সালের পর থেকে গত ৬ বছর ধরে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বিবর্তনবাদ পড়ানো হচ্ছে। যার কারণে ইতিমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের তরুণ শিক্ষিত শ্রেণীর একটা অংশের মধ্যে নাস্তিক্যবাদি চিন্তা-চেতনা প্রচুর বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ধর্মবিশ্বাস মতে বিবর্তনবাদের পাঠ কুফরী শিক্ষা। দেশের জাতীয় শিক্ষায় এই কুফরী শিক্ষার সন্নিবেশ ঘটিয়ে পুরো জাতিকে নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণায় গড়ে তোলার সর্বনাশা উদ্যোগ আমরা চুপচাপ দেখে যেতে পারি না। এ বিষয়ে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক, রাজনীতিবিদ ও দেশবাসীকে সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার তাগিদ অনুভব থেকেই আজকের সংবাদ সম্মেলন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তাদের ধর্মীয় আক্বিদা-বিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিরোধী ডারউইনের বিবর্তনবাদ শিক্ষা দেওয়া সংবিধান প্রদত্ত ধর্মীয় অধিকার রক্ষার বিধানের গুরুতর লঙ্ঘন। মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ঈমান-আক্বিদাবিরোধী বিবর্তন শিক্ষার পাঠ দেওয়া সংবিধান বিরোধী বলেও জানান জমিয়ত মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি পাঠ্যবই থেকে ইসলামী আকিদা-বিশ্বাস এবং সংবিধান বিরোধী ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা বাতিলের দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে ‘বিবর্তনবাদ’ অন্তর্ভুক্তির সাথে যারা জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তিরও দাবি করেন আল্লামা কাসেমী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী,মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক,মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী,মাওলানা তাফাজ্জল হক আজিজ, মুফতী মনির হোসাইন কাসেমী,মাওলানা নাজমুল হাসান,মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী,মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী,মাওলানা জয়নাল আবেদীন ,মাওলানা আবদুল গাফফার ছয়ঘরী ও মুফতী ইমরানুল বারী সিরাজী প্রমুখ৷
আরএম/