আওয়ার ইসলাম: পাঁচদিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাকে বহনকারী বিমানের বিশেষ ফ্লাইট। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, আজ স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-১৭২৩) ঢাকার উদ্দেশে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মুহা. নজরুল ইসলাম জানান, দ্বিপক্ষীয় এ সরকারি সফরের বিষয়ে সোমবার (৮ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সোমবার বিকেল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হবে।
এ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট জিং জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তিনি চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগদান করেন এবং ‘কোঅপারেশন ইন দি প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং’র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারকে বোঝানোর বিষয়ে বেইজিং ঢাকাকে আশ্বস্ত করে।
তিনি এ সমস্যা দ্বিপাক্ষিক সমাধানের পক্ষে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করে এ বিষয়ে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন।
এছাড়াও শেখ হাসিনা কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (সিপিসি) মিনিস্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সঙ্গ তায়ো’র সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় সিপিসি মিনিস্টার প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সমস্যাটি সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচি এবং অন্যান্য মিয়ানমারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার দলের আলোচনার বিষয়ে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্থ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ঢাকা এবং বেইজিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ৯টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। স্বাক্ষরিত অন্য দলিলগুলো হচ্ছে, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পর্যটন কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা স্মারক। ইয়ালু ঝাংবো ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা। ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট।
বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে অর্থনীতি ও কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি। ইনভেস্টমেন্ট কোঅপারেশন ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা নিয়ে সমঝোতা স্মারক। পিজিসিবি প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ গ্রিড নেটওয়ার্ক জোরদার প্রকল্পের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট।
ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে গভর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন এগ্রিমেন্ট। এবং ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে প্রিফারেনশিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট লোন এগ্রিমেন্ট।
৪ জুলাই চীনা প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন সিপিসির কার্যালয় গ্রেট হল অব দ্যা পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিংয়াং এর সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়।
যার মধ্যে রয়েছে, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য এলওসি (লেটার অব এক্সচেঞ্জ) এবং অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি এবং পর্যটন সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সাহায্য সংক্রান্ত এলওসির আওতায় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য চীন ২ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করবে বলে পররাষ্ট্র সচিব জানান।
-এএ