আব্দুল্লাহ আফফান: যুক্তরাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় ক্যামব্রিজে উন্মুক্ত হলো ইউরোপের প্রথম ইকো বা পরিবেশবান্ধব মসজিদ। ইউরোপের সর্বাধিক ব্যয়বহুল মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মসজিদটির নির্মাণে খরচ হয়েছে ২৪ মিলিয়ন ডলার।
পরিবেশবান্ধব মসজিদটির নাম নিউ ক্যামব্রিজ মসজিদ। মসজিদে একসাথে ১ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। এ ছাড়া জনকল্যাণমূলক নানা সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে এ মসজিদে। স্থানীয় মুসলিম ও অমুসলিমদের সেমিনার আয়োজনের ব্যবস্থাও রয়েছে। রয়েছে শিশুদের জন্য প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা।
২০০৮ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের লেকচারার ড. টিমোথি উইন্টার এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন এবং তহবিল সংগ্রহ শুরু করেন। প্রায় আট বছরের গবেষণা শেষে, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২৪ এপ্রিল মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।
মসজিদ চত্বরের সৌন্দর্য বর্ধনে অলঙ্করণে কাজ করেন বিখ্যাত শিল্পী ইম্মা ক্লার্ক। এসব নকশা ২০১২ সালে মসজিদ কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এরপর সবুজ সমারোহের আদলে কাঠ ও ইট ও টাইলসের ব্যবহারে তৈরি করা হয় এক গম্বুজ বিশিষ্ট পরিবেশবান্ধব ক্যামব্রিজ ইকো মসজিদ। এতে ব্যবহৃত উপকরণ থেকে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
নিউ ক্যামব্রিজ মসজিদের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান টিমোথি উইন্টার বলেন, মসজিদটিতে দিনের বেলা ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহারের দরকার হয় না। এখানে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের ব্যবস্থা আছে। মসজিদের ছাদে বৃষ্টির পানি প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে ভেতরে বেশ ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। রাতের জন্য ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহৃত হলেও, তা চলে সোলার প্যানেলের সাহায্যে। ইটের পিলারের বদলে ১৬টি গাছের কলাম ব্যবহার করা হয়েছে।
সবুজ সমারোহের আদলে তৈরি করা হয় এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। পবিত্র কুরআনে যে সব ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর সমন্বয়ে তৈরি একটি বাগান মসজিদ-কমপ্লেক্সের ভেতর থাকবে।
ইউরোপের প্রথম ইকো মসজিদ নির্মাণে এগিয়ে আসে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার বেশকটি দেশ। এটি নির্মাণে মোট খরচের প্রায় দুই তৃতীংশ খরচ করে তুরস্ক। ২০০৯ সালে ক্যামব্রিজের মিল রোডে ৪ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে ১ একর জমি কেনা হয়।
-এএ