আওয়ার ইসলাম: শ্রীলঙ্কার ৯ মুসলিম মন্ত্রীর সবাই বাধ্য হয়ে একযোগে পদত্যাগ করেছেন। তাদের সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন দুই মুসলিম রাজ্যপালও।
জানা যায়, গত সোমবার দেশটির প্রভাবশালী বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আথুরালিয়ে রাথানার আমরণ অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব মুসলিম মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন।
মুসলিম মন্ত্রীদের গণপদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় বেশ কয়েকজন সিনিয়র রাজনীতিকসহ উদারমনা অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন। ওই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সাম্প্রদায়িক দাবি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ১০ লাখ। এর মাত্র ৯ শতাংশ মুসলিম। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত মহাসাগরীয় দেশটির তিনটি চার্চ ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
২৫৩ জন নিহত ও কয়েকশ’ আহত হন। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। স্থানীয় মুসলিমদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে।
মুসলিমদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে থাকে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা।
এরই মধ্যে দুই প্রাদেশিক গভর্নর ও এক মন্ত্রী- সিনিয়র তিন মুসলিম কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে ভক্তদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন একাধারে প্রভাবশালী সন্ন্যাসী, পার্লামেন্টের এমপি ও প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার উপদেষ্টা আথুরালিয়ে রাথানা।
প্রেসিডেন্ট ওই তিন কর্মকর্তাকে না সরানো পর্যন্ত আমরণ অনশন করারও ঘোষণা দেন ওই উপদেষ্টা ও সন্যাসী। তিনি ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলাকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন।
তার সমর্থনে রাজধানী কলম্বো ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভও হয়। দিনচারেক আগে মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু সদস্যদের সরানোর দাবিতে প্রবল বিক্ষোভও হয়।
অভিযোগ ওঠে, শ্রীলঙ্কার আঞ্চলিক ইসলামিক সংগঠন ন্যাশনাল তৈহিদ জামাতের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর যোগাযোগ রয়েছে। সন্ন্যাসীর চার দিনের অনশনের মাথায় মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট। এরপরই অনশন ভঙ্গ করেন ওই সন্ন্যাসী।
মন্ত্রিসভার অন্য ৮ জন মুসলিম মন্ত্রীকে টার্গেট না করলেও অন্য তিন কর্মকর্তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সোমবার একযোগে ইস্তফা দেন ওই নয় মুসলিম মন্ত্রী। সিআইডি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা আর মন্ত্রিসভায় ফিরবেন না বলেও জানিয়েছেন।
-এটি