মোস্তফা ওয়াদুদ: বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর ‘মুতাওয়াসসিতাহ’ (নিম্ম মাধ্যমিক) বিভাগে তৃতীয় ও ‘ইবতিদাইয়াহ’ (প্রাইমারী) বিভাগে ২য় ও ৩য় স্থান লাভ করে বেফাকের মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে জামিয়া রাব্বানিয়া আরাবিয়া, জালকুড়ি, নারায়ণগঞ্জ মাদরাসা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর ৪২তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এ তথ্য নিশ্চিতভাবে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নজরুল ইসলাম আওয়ার ইসলামের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান ভালো রেজাল্ট করায় আমি ছাত্র-শিক্ষক সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
তিনি ভালো রেজাল্টের কারণ হিসেবে ‘গবেষণা’ কে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের দেশের স্কুল-কলেজে যেভাবে গবেষণা করে ছাত্রদের পড়ানো হয়। ছাত্রদের পড়াশুনার মান উন্নয়ণ করা হয়। তেমনি আমিও তাদের মতো গবেষণা করে আমার ছাত্রদের পড়াই। আমাদের মাদরাসার ছাত্রদের পড়ালেখা কিভাবে ভালো করা যায়? কিভাবে তাদের আমলে উন্নতি হয়? এসব নিয়ে প্রচুর গবেষণা করি। আর এ গবেষণার আঙ্গিকে আমি আমার প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করি।’
তিনি বলেন, একটা হলো মানুষের কাছে বলা। আরেকটা হলো বাস্তবতা। আমার এখানে বাস্তবতা খোঁজে পাবেন আপনি। আর গবেষণা করে পড়ালেখা করানোর কারণে আমি বাহ্যিক ও অভ্যান্তরীণ উভয় রকমের ফলাফল পাচ্ছি। আমাদের মাদরাসায় সব সময় আমলের পরিবেশ চালু থাকে। আমি শিক্ষক নিয়োগ দেই যোগ্য ও আমলী দেখে। সর্বোপরি আমাদের ছাত্রদের অক্লান্ত মেহনত ও শিক্ষকদের আন্তরিক পরিশ্রমের ফলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ সাফল্য দিয়েছেন। ভবিষতে এ সাফল্য ধরে রাখতে আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া চাই। সাথে সাথে আপনাদের (আওয়ার ইসলাম) মাধ্যমে সবাইকে অনুরোধ করবো আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার জন্য।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বেফাকের ফলাফল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতি আবূ ইউসুফ বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলীর নিকট হস্তান্তরের পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
জামিয়া রব্বানিয়া মাদরাসার দারুল ইফতার মুশরিফ মুফতি আবু বকর জানিয়েছেন, আমাদের মাদরাসা থেকে মোট ৬৯ জন ছাত্র মেধাস্থান অর্জন করেছে। এর মাঝে ‘ফজিলত’ (স্নাতক) বিভাগে ৭ জন, ‘সানাবিয়া উলইয়া’ (উচ্চ মাধ্যমিক) বিভাগে ৪ জন, ‘মুতাওয়াসসিতাহ’ (নিম্ম মাধ্যমিক) এ ১৫ জন, ‘ইবতিদাইয়াহ’ (প্রাইমারী) তে ৪১ জন ও ‘হিফজুল কুরআন’ এর ২ জন ছাত্র রয়েছে।
তিনি আরো জানান, এর আগে ২০১৫ সালে বেফাকের তাকমিল (এম. এম) বিভাগে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দুজন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিলো। জামিয়া রব্বানিয়া মাদরাসার শায়খুল হাদিস হিসেবে রয়েছেন আল্লামা আব্দুল মতিন বিন হুসাইন।
মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই অত্যন্ত সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে মাদরাসার নিজস্ব সাত তলা ভবন রয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধাসহ পড়াশুনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাপনাই রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
এ মাদরাসায় আগামী ৬ শাওয়াল ১৪৪০ হিজরি থেকে অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু হবে৷ ৭ শাওয়াল (একদিন মাত্র) নতুন ছাত্রদের ভর্তির কার্যক্রম চলবে৷
এ বছর বেফাকের ৪২তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় তাকমিল (এম.এ.) ব্যতিত ৬টি স্তরে মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ জন অংশগ্রহণ করে। এর মাঝে উত্তীর্ন পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫২ জন।
বি.দ্র. আপনার মাদরাসার ভালো রেজাল্টের খবর জানাতে পারেন আমাদের। আমরা গুরুত্ত্বসহ আপনার প্রতিষ্ঠানের সংবাদ করবো।
এমডব্লিউ/