আওয়ার ইসলাম: সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা ৩৫ বছর না করা হলে আসন্ন রমযানের পর সারাদেশে অবরোধের মতো বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ।
জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের দেয়া বক্তব্য ‘সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়স ৩৫ করা যাবে না’ কে ‘ডাহা মিথ্যা’ ছাড়া আর কিছু নয় বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ।
তিনি বলেন, আমরা জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ন্যূনতম ৩৫ বছর করার আহ্বান জানাচ্ছি।
যদি আগামী রোজার ঈদের আগে এ সিদ্ধান্ত না নেয়া হয়, তাহলে ঈদের পর অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়া হবে। সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য ৩৫ প্রত্যাশীদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেই, ২৩ বছর বয়সে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাচ্ছেন। সংবিধান ও চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী পূর্ণ পেনশন পাওয়ার জন্য ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। কেউ যদি ৩৫ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দেয় তাহলে পঁচিশ বছর পূর্ণ করতে হলে তাকে ৬২ বা ৬৩ বছর বয়সে অবসরে যেতে হবে।কিন্তু বর্তমানে অবসরের বয়স ৫৯ বছর।
তাই আইন অনুযায়ী প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সুযোগ নেই।’- প্রতিমন্ত্রীর এমন কথা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য আংশিক সত্যের অপলাপ এবং উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো ছাড়া আর কিছু নয়।
সেশনজটসহ ৫ দফা দাবিতে গত ২৪ এপ্রিল নীলক্ষেত মোড়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছিল। তাছাড়া ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মাস্টার্স পরীক্ষায় সেশনজট ছিল গড়ে তিন বছর। কাজেই সেশনজট না থাকার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোটাই সত্যের অপলাপ।
সেশনজটের উল্লেখিত পরিসংখ্যান প্রতিমন্ত্রী না জেনে থাকলে সেটি তার অজ্ঞতা এবং আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য।
তিনি আরও বলেন, সরকারের সবকিছুই চলে বিধি বিধানের আলোকে। সংবিধান ও চাকরির বিধিমালা পবিত্র কুরআন নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না।
প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন।’ অথচ বাংলাদেশে একই ভূখণ্ডে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ভিন্ন ভিন্ন হওয়াটা কি সংবিধান পরিপন্থী নয়?
আরএইচ/