শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

‘ব্রুনাই সফর দু’দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সাম্প্রতিক ব্রুনাই সফরকে সার্বিক বিবেচনায় অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসু আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ সফর দু’দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে গণভবনে ব্রুনাই সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সফরকালে ব্রুনাই-এর সুলতান আমাদের প্রতি যে আতিথেয়তা ও সম্মান দেখিয়েছেন তা ছিল খুবই বিরল। আমাদের এ সফর দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আর সুদৃঢ় করবে বলে আমার বিশ্বাস।’

ব্রুনাই দারুস সালাম-এর সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে গত ২১ থেকে ২৩-এ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সে দেশ সফর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরকালে তিনি ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সহ সুলতান এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ-ব্রুনাই বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বেশকিছু কর্মসূচিতে যোগ দেন।

ব্রুনাইয়ের সুলতানের সরকারী বাসভবন নুরুল ইমান এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রুনাইর সুলতান হাসানাল বলকিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং এলএনজি সরবরাহ সংক্রান্ত ৭টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রুনেই দারুস সালাম খাদ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখপূর্বক এ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপকভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে। কৃষিক্ষেত্রে কারিগরি সহযোগিতাসহ যৌথভাবে খামার স্থাপন, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষিপণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সম্ভাবনা বিবেচনার বিষয়ে দু’পক্ষ একমত হয়।

দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চালুর জন্য সমীক্ষা পরিচালনা এবং ভবিষ্যতে দ্বৈতকর অব্যাহতি চুক্তি এবং পারস্পরিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ চুক্তির সম্ভাব্যতা বিবেচনার সিদ্ধান্ত হয়।

স্বাস্থ্য খাতে প্রশিক্ষণ ও পেশাজীবীদের নিয়োগ, ঔষধ উৎপাদন ও বাণিজ্য, বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ব্রুনাই ঐকমত্য পোষণ করে।এছাড়া, দ্বিপাক্ষিক বিনিময় ও সহযোগিতা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে দু’দেশের মধ্যে আর্থিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়।

সামরিক খাতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়। একইসঙ্গে দু’দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী কর্মীদের অবদান উল্লেখপূর্বক এ ক্ষেত্রে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে দুই দেশই।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্রুনাই-এর সুলতান বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রসংশা করেন। সুলতান শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দেওয়া ও তাদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য ধন্যবাদ জানান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুলতান রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায়ভিত্তিক ও স্থায়ী সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আসিয়ান দেশসমূহের অধিকতর অংশগ্রহণ ও কার্যকর ভূমিকা পালন নিশ্চিত করার বিষয়ে আমি সুলতানের সহযোগিতা কামনা করি।’

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি ওআইসি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বিনিময় বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক ফোরাম গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রতি সুলতান সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং আসিয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্রুনাই সুলতানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ছিলেন, কৃষিমন্ত্রী, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিদুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীগণসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।

এছাড়া, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত ৫৩-সদস্য বিশিষ্ট একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও তাঁর সফরসঙ্গী হন।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ