আওয়ার ইসলাম: বর্তমানে স্ট্রোক মানুষের মৃত্যুর চতুর্থ কারণ হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু এই ব্রেন স্টেক আসলে কী? আর কেনইবা এ রোগ হয়?
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়ে আক্রান্ত অংশের কোষ নষ্ট হওয়াকেই স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোক বলে।
জানা যায়, মস্তিষ্কের অংশবিশেষ নষ্ট হওয়ায় রোগীর দেহে বেশ কিছু শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়। যেগুলোকে স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
যেমন- প্যারালাইসিস, পা, হাত, মুখ অথবা শরীরের ডান বা বাম অংশ অবস হয়ে যাওয়া, কথা বলতে বা কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া, বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পতিত হওয়া, কথা জড়িয়ে আসা।
একটা চোখে অথবা উভয় চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া, অথবা ঝাপসা দেখা, চলাফেরা করতে না পারা, চলাফেরায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রমে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়া, হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রাথমিক অবস্থায় কারও যদি স্ট্রোক দেখা দেয়, তাহলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। না হলে রোগীর মস্তিষ্কের বেশি অংশ নষ্ট হয়ে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। রোগীর দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা বা মৃত্যুর মতো বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
তারা আরও জানান, মস্তিষ্কের রক্তনালি বন্ধ হয়ে ইসকেমিক স্ট্রোক হতে পারে অথবা রক্তনালি ফেটে গিয়েও হিমোরজিক স্ট্রোক হতে পারে। অল্প সময়ের (পাঁচ মিনিটের কম সময়ে) জন্য অজ্ঞান হওয়া।
মাথা ঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা, কথা বলতে সমস্যা, শরীরের কোনো অংশ অবস হয়ে যাওয়া এবং পাঁচ থেকে দশ মিনিটের রোগীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসাকে মিটি স্ট্রোক বলা হয়।
ঠিক কি কারণে স্ট্রোক আক্রান্ত হয় মানুষ
অধিক পরিমাণে লবণ খাওয়া, চর্বি খাওয়া এবং রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরলের উপস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করে। আমাদের দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৬০-৭০ ভাগ রোগী অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা হিসেবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যদিও স্ট্রোকের সঠিক কারণ নির্ণয় করা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে বেশকিছু শারীরিক অবস্থা স্ট্রোকের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
যেমন- শারীরিক কর্মতৎপরতার অভাব, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকস বিদ্যমান থাকা, বংশগতভাবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া ইতিহাসে বিদ্যমান। অতিমাত্রায় মদ্যপান ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ হার্টের ভাল্বে সমস্যা অনিয়মিত হৃত্স্পন্দন, ইতোপূর্বে মিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া।
এর প্রতিকার কী
শারীরিক কর্মতৎপরতা সম্পন্ন করা, ধূমপান ত্যাগ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিকস কন্ট্রোল ও অধিক পরিমাণ লবণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা।
চিকিৎসা
মিনি স্ট্রোক ছাড়া ইসকেমিক ও হিমোরজিক স্ট্রোকে রোগীদের তাত্ক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অথবা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। রোগী অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপে বিদ্যমান থাকলে তাত্ক্ষণিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ইনসুলিন-জাতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা। স্ট্রোকের অনেক রোগী খাদ্য গ্রহণে অসমর্থ হয়ে পড়েন, তাদের ইনজেকশন বা নাকে নল দিয়ে খাদ্য গ্রহণের ব্যবস্থা করা।
সচেতনতা
ফলে এ মরণঘাতী স্ট্রোক নিয়ে যেমন দুর্ভাবনার কিছু নেই। আবার এ রোগটিকে কোনোভাবেই অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা চলবে না। বরং ব্রেন স্ট্রোক নিয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
আরো পড়ুন- মিরসরাইয়ে ‘জঙ্গি আস্তানা’য় অভিযানে ২ মরদেহ উদ্ধার
ব্যস্ততার জন্য যেসব পিন্সিপাল মাদরাসায় সময় দিতে পারেন না; তাদের জন্য সুখবর