আওয়ার ইসলাম: ‘আমরা যেন পশ্চিমা মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সাদা বাতাস যেদিকে যায়, শুকনো ডালপালার পিণ্ডের মত আমরা সেদিকে গড়িয়ে চলি। শ্বেতাঙ্গ মানুষ হচ্ছে ক্যাকটাসের মতো, মাটির গভীরে শিকড় গেড়ে, আমাদের দূরে দূরে রাখতে শিরদাঁড়া উঁচু করে আছে’। সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া ম্যালকম এক্সের (হাজি মালিক আল-শাব্বাজ) হারিয়ে যাওয়া আত্মজীবনীর অংশে এমন বক্তব্য উঠে এসেছে।
‘দ্য অটোবায়োগ্রাফি অফ ম্যালকম এক্স (ম্যালকম এক্সের আত্মজীবনী)’ বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বিখ্যাত বই। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে বইটির হারিয়ে যাওয়া অংশকে ঘিরে রহস্যের কোনো সমাধান হচ্ছিল না। হারানো কয়েকটি অধ্যায়ে কী ছিল তা অজানাই থেকে গিয়েছিল।
তবে এবার আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে ম্যালকমের আত্মজীবনীর অপ্রকাশিত অধ্যায়গুলো।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের নিলাম সংস্থা গের্নসে ‘দ্য নিগ্রো’ শিরোনামে একটি অপ্রকাশিত অধ্যায়ের পাণ্ডুলিপি বিক্রি করেছে।
নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরিতে কৃষ্ণাঙ্গদের সংস্কৃতি গবেষণায় নিয়োজিত শম্বুর্গ সেন্টার পাণ্ডুলিপিটি কিনেছে।
শম্বুর্গের পরিচালক কেভিন ইয়ং নিশ্চিত করেছেন যে, এটি ম্যালকম এক্সের আত্মজীবনীর হারানো অংশ। ২৪১ পৃষ্ঠার আত্মজীবনীর খসড়াও তারা বৃহস্পতিবার কিনেছেন, কিন্তু সেটির মূল্য কত ছিল তা প্রকাশ করা হয়নি।
বহু বছর ধরে পাণ্ডুলিপিটি গ্রেগরি পার্কসের কাছে ছিল। পেশায় আইনজীবী পার্কস সেটি কিনেছিলেন লেখক অ্যালেক্স হ্যালির সংগ্রহ থেকে।
সম্পূর্ণ বইটির খসড়া ঐতিহাসিক বস্তু হওয়া ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণে মূল্যবান। এটিতে ম্যালকম এক্স ও হ্যালির হাতে লেখা রিভিশন ও মন্তব্য রয়েছে।
তাদের লিখিত কথোপকথনে মুসলিম ম্যালকম এক্স কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে আমেরিকার আচরণের তীব্র সমালোচনা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বর্ণবাদ ও সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মার্কিন সরকারসহ ম্যালকমের বিরোধীরা।
১৯৬৫ সালে ন্যাশন অব ইসলাম দলের তিন সদস্য ম্যালকমকে হত্যা করে। এর অল্প কিছুদিন আগে ম্যালকম ওই উগ্রপন্থী সংগঠনটি ত্যাগ করেছিলেন।
ম্যালকম এক্স ছিলেন একজন আফ্রিকান-মার্কিন মুসলিম রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মানবাধিকার আদায়ের আন্দোলনে অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিলেন। জন্মের পর তাঁর নাম হয় ম্যালকম লিট্ল এবং ইসলামে ধর্মান্তরিত হলে তাঁর নতুন নামকরণ হয় ম্যালকম এক্স। তিনি আল-হাজ্জ মালিক আল-শাব্বাজ নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন: যেসব সিদ্ধান্ত আসতে পারে ওয়াজাহাতি জোড় থেকে
আরএম/