অাওয়ার ইসলাম: মানি লন্ডারিং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের প্রস্তাবিত বিধিমালায় সুনির্দিষ্টভাবে ২১ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের পক্ষ থেকে খসড়া বিধিমালায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (দুদকসহ যে ৫টি সংস্থা অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারে) সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
এতে বলা হয় ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলতে এই আইনের অধীন তদন্তকারী সংস্থাকে বুঝাবে।’ দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে সব সংস্থা মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ তদন্ত করবে তারা শুধু তদন্তের সময়ই নয়, অনুসন্ধানের সময়ও যৌথভাবে কাজ করতে পারবে।
দুদক কিভাবে এবং কোন বিধিতে মানি লন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান ও তদন্ত করবে মতামতে তারও ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘এই বিধিতে যা কিছু থাকুক না কেন দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এবং ওই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালা অনুসরণ করা যাবে।’
এ বিষয়ে দুদকের যুক্তি হচ্ছে- তাদের আইনের অধীন পর্যাপ্ত বিধিমালা আছে। এ ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং বিধিমালা অনুসরণের বাধ্যবাধকতা থাকলে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মানি লন্ডারিং আইনের একটি খসড়া বিধিমালা প্রস্তুত করে। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এপ্রিলে দুদক, সিআইডি, এনবিআর ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ অংশীজনের মত চেয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে খসড়া বিধিমালায় তার নিজস্ব অভিমত তুলে ধরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইন বিভাগের মহাপরিচালক মো. মঈদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কী মতামত দিয়েছি স্মরণ করতে পারছি না। তবে প্রস্তাবিত বিধির কিছু জায়গায় স্পষ্টীকরণ দরকার ছিল। আমরা সেটা করে দিয়েছি। তার কতটুকু রাখা হবে কতটুকু হবে না সেটা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।’
আইন সংশোধনের তিন বছর পর মানি লন্ডারিং আইনের বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০১৫ সালের নভেম্বরে আইনটি সংশোধন করে তদন্তকারী সংস্থা হিসাবে দুদকের পাশাপাশি সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হলেও বিধির অভাবে এসব সংস্থার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এমনকি সংশোধিত আইনের কারণে দুদকও মানি লন্ডারিং তথা অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে শক্ত কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কেন না, আইনে দুদককে শুধু ‘ঘুষ দুর্নীতি’ শিরোনামে একটি অপরাধের তদন্তের এখতিয়ার দেয়া হয়।
অন্যদিকে সিআইডি ও এনবিআরসহ চারটি সংস্থার তদন্ত শেষে অর্থ পাচারসংক্রান্ত অপরাধের মামলার চার্জশিট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কে হবেন তাও নির্ধারণ করা হয়নি। এ বাস্তবতায় সরকার ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৮’ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মাদক মামলায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড : প্রধানমন্ত্রী