শায়েখ মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ: রতন টাটার টুইট থেকে সংগৃহীত। তার ইংরেজি পোস্টের অনুবাদ।
জার্মানি একটি অত্যন্ত শিল্পোন্নত দেশ। অনেকে মনে করে, এদেশে মানুষ হয়তো বিলাসবহুল জীবনযাপন করে।
যখন আমরা হামবুর্গে পৌঁছলাম, আমি ও আমার সহকর্মীরা একটি রেস্টুরেন্টে গেলাম। আমরা দেখলাম যে অনেকগুলো টেবিল খালি।
একটি টেবিলে অল্প বয়সী এক যুগল খাবার খাচ্ছে। টেবিলের উপর ছিল মাত্র দুটি খাবার এবং বিয়ারের দুটি ক্যান। আমি বিস্ময়ের সাথে ভাবলাম, এমন সাধারণ খাবার কি প্রেমিকার মন জয় করতে পারে। মেয়েটি হয়তো এমন কৃপণ ছেলেকে ত্যাগ করে চলে যাবে।
অন্য টেবিলে কয়েকজন বৃদ্ধ মহিলা ছিল। যখন একটি থালা পরিবেশন করা হয়, তখন ওয়েটার তাদের সামনে খাদ্য বণ্টন করে দেয় এবং তারা তাদের প্লেটে খাবারের প্রতিটি ক্ষুদ্র অংশ শেষ করে ফেলে।
আমরা ক্ষুধার্ত ছিলাম। আমাদের স্থানীয় সহকর্মী আমাদের জন্যও খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন। আমরা যখন খাবার শেষ করলাম তখন টেবিলের ওপর এক তৃতীয়াংশ খাদ্য অবশিষ্ট ছিল।
যখন আমরা রেস্টুরেন্ট ছেড়ে যাচ্ছিলাম, তখন একজন বয়স্কা মহিলা আমাদেরকে ইংরেজীতে কিছু কথা বলল যার সারমর্ম হচ্ছে, তারা আমাদের খাবার অপচয় করার কারণে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। আমার সহকর্মী বৃদ্ধ মহিলাকে বলল, "আমরা আমাদের খাদ্যের জন্য মূল্য পরিশোধ করেছি। আমরা কতটুকু খাবার না খেয়ে রেখি দিয়েছি সেটা দেখা আপনার দায়িত্ব নয়।"।
বয়স্কা মহিলা অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হল। সে তার হাতের মুঠোফোন থেকে কোথায় যেন কল করল। কিছুক্ষণ পরে, সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার ইউনিফর্ম পরা একজন লোক এসে হাজির। আমাদের তর্কের বিষয়বস্তু শোনার পর তিনি আমাদের উপর 50 ইউরো জরিমানা আরোপ করলেন। আমরা সকলে নির্বাক হয়ে গেলাম।
অফিসার আমাদের কঠোর স্বরে বললেন, আপনি যতটুকু খেতে পারবেন ঠিক ততটুকু অর্ডার করবেন। টাকার মালিক আপনি, কিন্তু সম্পদের মালিক সমাজের সকলে। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা সম্পদের স্বল্পতায় কষ্ট পাচ্ছে। সম্পদ অপচয় করার কোন অধিকার আপনার নেই।”
এই সমৃদ্ধ দেশের মানুষদের মানসিকতা আমাদের সবাইকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছিল। সত্যিই বিষয়টি আমাদের ভাবার দরকার। আমরা এমন দেশের নাগরিক যেখনে প্রচুর সম্পদ নেই। আত্মমর্যাদা রক্ষার নামে আমরা প্রচুর পরিমান খাদ্য অপচয় করি, যখন আমরা কাউকে দাওয়াত খাওয়াই।
শায়েখ জাকারিয়া রহ.এর পূত্রবধূর ইন্তেকাল!