আওয়ার ইসলাম : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিধান রেখে নির্বাচন পরিচালনা আইন (আরপিও) সংশোধন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে মোট ১৯টি অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনা হচ্ছে।
সংশোধনীতে নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পোলিং এজেন্টদের ইসির পরিচয়পত্র দেওয়ারও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। আর ইভিএমে ভোট দিতে লাগবে আঙ্গুলের ছাপ ও জাতীয় পরিচয়পত্র।
ইসি সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ইসির আইন সংস্কার কমিটি আরপিও সংশোধনে ১৯টি অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। প্রস্তাবগুলো আগামী সপ্তাহে কমিশন সভায় অনুমোদন হলে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের পর সংসদে পাশ করা হবে। আইন সংস্কার কমিটির প্রস্তাবে প্রচলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের পাশাপাশি ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, সংজ্ঞায় ইভিএম সংজ্ঞায়িত করার প্রয়োজন আছে। তবে বর্তমান ইভিএম শুধু ভোট কাস্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হবে না। ইভিএম আঙ্গুলের ছাপ বা এনআইডি কার্ড নম্বর দিয়ে ভেরিফিকেশন করবে।
যদি ভোটার ভেরিফিকেশনে উত্তীর্ণ না হয় তবে ভোট দিতে পারবে না। আরপিওর বিভিন্ন অনুচ্ছেদে ইভিএম ব্যবহারের সুপারিশ এসেছে আইন সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে।
আরপিওর ২৮ (ক) অনুচ্ছেদেদের সংশোধনীতে ব্যালট বাক্সের সঙ্গে ইভিএম যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ভোটগ্রহণের আগে ব্যালট বাক্স অথবা ইভিএম শূন্য অবস্থায় আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
একই সঙ্গে ২৮ (গ) অনুচ্ছেদে খালি ব্যালট বাক্স ও ইভিএম সিল করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ২৮ (৬) অনুচ্ছেদে ইভিএমে ভোটদানের সময় বাটন গোপনে যেন পরিচালনা করা হয় সে বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। ৩১ (৩) অনুচ্ছেদে হাতে অমোচনীয় কালিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে ব্যালট সরবরাহ না করার এবং ভোটদান থেকে বিরত রাখার বিষয় যুক্ত করতে বলা হয়েছে। ৩৩(১) অনুচ্ছেদে ভোট চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে ইভিএমকে বাইরে রাখার বিষয়টি যুক্ত করতে বলা হয়েছে।
৩৪ (১) অনুচ্ছেদের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নষ্ট ব্যালটের বিষয়টি ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ৩৬ (৬) অনুচ্ছেদে সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ইভিএম ভোটিংয়ের ফলাফলের নথি হচ্ছে স্টোরেজ ডাটা কার্ড।
অন্যদিকে ১২ (৩) অনুচ্ছেদে অনলাইনে মনোনয়ন জমা এবং এর প্রাপ্তিস্বীকারপত্র প্রদানের বিষয়টি যুক্ত করতে সুপারিশ করেছে আইন সংস্কার কমিটি।
এছাড়া ১৩ (১)(এ) অনুচ্ছেদে প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা। ২২(৩) অনুচ্ছেদে পোলিং এজেন্টকে প্রার্থীর প্রতীক সংবলিত কার্ড না দিয়ে ইসির পরিচয়পত্র দেওয়া। ১২(৩) অনুচ্ছেদে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের বিধান যুক্ত করাসহ মোট ১৯টি অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) যে ১৯টি অনুচ্ছেদে সংশোধন আসছে সেগুলো হল:- ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৯, ২২, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৬, ৩৭, ৪৪।
আরও পড়ুন : দুই সিটিতে ইভিএম বাতিল ও সেনা মোতায়েনের দাবি বিএনপির