আওয়ার ইসলাম : আগামী সোমবার (২ এপ্রিল) থেকে এইচএসসি, আলিম পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে শিক্ষক, অভিভাবক, গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এবারের পরীক্ষায় মোট ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এ পরীক্ষা উপলক্ষে কঠোর শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষকরে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নের অনেক সেট ছাপা হবে। তবে, কত সেট প্রশ্ন ছাপা হবে তা এখনই বলতে নারাজ মন্ত্রণালয়। এটা কৌশলগত ব্যবস্থা হিসেবেও মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।
পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বারে সেট কোড ব্যবহারের নির্দেশনার এসএমএস যাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। এর আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা যাবে না বলে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে, কেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করা নিয়েও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতিত অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
তবে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ ছবি তোলা যায়, এমন ফোন কেন্দ্রের ভেতরে ব্যবহার করতে পারবেন না ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এসব পদক্ষেপের ফলে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাবে বলে আশাবাদী শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা আগে যা বলেছি এবং করেছি তারপর আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে।
যার ফলে আমরা আগের চেয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অনেক বেশী পদ্ধতি গ্রহণ করছি। অনেক কৌশল নিয়েছি। সেদিক থেকে আমরা আশা করতে পারি। যে পরিমাণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব সে পরিমাণ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
এদিকে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২টি মামলা হয়েছে। এর সাথে জড়িত ১৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত পরীক্ষার্থীদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের চাকরি থেকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন, তারা পার পেয়ে গেছেন তা ভাবার কারণ নেই। নানাভাবে চেকিং চলছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম থেমে নেই, এখনও চলছে। পরীক্ষা উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব ধরণের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও আগে সিদ্ধান্ত ছিল, যেসব কোচিং সেন্টার এইচএসসি ও সমমানের
শিক্ষা কার্যক্রম চালায়, শুধুমাত্র সেগুলো শুধু বন্ধ থাকবে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদা পরিপত্র জারি করে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এদিকে, পরীক্ষার আগে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে যায় বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন প্রকাশ করে প্রচারণা চালানো হয়। এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জাতির ভবিষ্যতের স্বার্থে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারকে ছোট করার জন্য জাতিকে হতাশ করে এমন প্রচার না করার আহ্বান জানান তিনি।