আওয়ার ইসলাম: মাদারীপুরের কালকিনির বাঁশগাড়িতে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আটকে ৯ ব্যক্তিকে নির্যাতনের অভিযোগে থানার ওসি, তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক ও পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য খবির মৃধার বাবা নূরু মৃধা।
মামলায় কালকিনি থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হারুন-অর-রশিদ, খাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম, এসআই বিল্লাল শিকদার, এএসআই রাজিবুল এবং তাদের সহযোগী হিসেবে রশিদ মুন্সী, বাঁশগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সুমন বেপারী ও তার ভাই রাজন বেপারীকে আসামি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের পান ব্যবসায়ী কবির মৃধার দুই চোখ উত্তোলন মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের নেতৃত্বে তার লোকজন কবির মৃধার মামাতো ভাই জহিরুল ইসলামের একটি চোখ নষ্ট করে দেয়। এ সময় বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা-হামলার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ৩ মার্চ রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে খুনেরচর এলাকা থেকে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খবির মৃধা ও তার স্বজন ও সমর্থক বাদল মৃধা, আবদুল মৃধা, জসিম মৃধা, মিন্টু সরদার, মান্নান খান, আমিনুল মৃধা, খালেক সরদার ও রুহল আমিনকে আটক করে। এরপর তাদের খাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে হাত-পাঁ ও চোখ বেঁধে লোহার রড, বেতের লাঠি ও বন্দুকের বাট দিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে।
তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে ৯ জনকেই কালকিনি থানা নেয়ার পর সেখান থেকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয় পুলিশ। গ্রেফতারের দুদিন পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
মামলায় ভূক্তভোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও সাক্ষী হয়েছেন কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান সবুজসহ অন্যরা।
মামলার বাদী নূরু মৃধা অভিযোগ করে বলেছেন, স্থানীয় বিরোধের জের ধরে সুমন চেয়ারম্যান আমার ছেলে কবিরের দুটি চোখ উপরে তাকে অন্ধ করে দিয়েছে। এই মামলা তুলে নিতে পুলিশের ওসি কৃপা সিন্ধু বালাসহ পুলিশ আমাদের হুমকি দিতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আমার আরেক ছেলে মেম্বার কবির মৃধাসহ আত্মীয়-স্বজনদের ধরে এমন অমানুষিক নির্যাতন করেছে পুলিশ। আমরা এর থেকে নিস্কৃতি চাই।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে শুনেছি। তবে আদালত মামলা গ্রহণ করেছেন কিনা এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করা হয়েছে তা আমি এখনও জানি না। মামলার কাগজপত্র পাওয়া গেলে বিস্তারিত বলতে পারবো।