আওয়ার ইসলাম: মুহম্মদ জাফর ইকবাল (ছবি- সংগৃহীত)এখনও ক্ষত শুকায়নি। শরীরে একাধিক সেলাই। সে অবস্থাতেই নিজের দায়বোধ থেকে বিছানায় শুয়ে কলম ধরেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। লেখার শিরোনাম করেছেন ‘অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী’।
শনিবার (৩ মার্চ)সিলেটে ঘাতকের ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত এই শিক্ষককে সেদিনই রাতে ঢাকার সিএমএইচে আনা হয়। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। বুধবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় তাকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে।
তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক গত সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উনার রেস্ট হয় না, সুস্থ হতে যতদিন লাগে, এখানে (সিএমএইচে) থাকুক, উনি ভালো আছেন।’
ড. জাফর ইকবাল এই লেখায় তার আহত হওয়ার পর থেকে ঢাকায় আসার সময়টুকু তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি একবারও জ্ঞান হারাইনি। মাঝে মাঝে যখন মনে হয়েছে, অচেতন হয়ে যাবো, দাঁতে দাঁত কামড়ে চেতনা ধরে রেখেছি।
কেন জানি মনে হচ্ছিলো অচেতনতার অন্ধকারে একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসবো না।’
‘ঘুমিয়ে আছি, না জেগে আছি—আমি জানি না’ উল্লেখ করে ঢাকায় আসার সময়ে নিজের অনুভূতি কেমন ছিল, তা বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি চেতনা এবং অচেতনার মাঝে ঝুলে আছি।
টের পেলাম আমাকে স্ট্রেচারে শুইয়ে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাকে কোথায় জানি তোলা হলো, আশেপাশে সামরিক পোশাক পরা মানুষ।
আমার কমবয়সী সহকর্মীদের কেউ কেউ আছে। আবছা অন্ধকারে হেলিকপ্টারের ইঞ্জিনের গর্জন শুনতে পেলাম। গর্জন বেড়ে উঠলো—নিশ্চয়ই আকাশে উড়তে শুরু করছে।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথম লেখাটি কীভাবে এলো প্রশ্নে তার ব্যক্তিগত সহকারী জয়নাল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতি বুধবার স্যার সব পত্রিকায় কলাম পাঠান। এবার সেটা হবে কী হবে না, ভাবছিলাম।
এ সপ্তাহে লেখা পাঠানো যাবে না— এমন বার্তা সবাইকে পাঠাবো কিনা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ স্যারের ফোন আসে। তিনি জানান, লেখা ইমেইলে পাঠানো হয়েছে।
কীভাবে এটা সম্ভব হলো জানাতে গিয়ে তিনি (জয়নাল আবেদীন) আরও বলেন,‘স্যার লেখাটি লিখে মেয়ে ইয়েশিম ইকবালকে দিয়ে পাঠিয়েছেন।’
জয়নাল আবেদীন মঙ্গলবার পর্যন্ত জাফর ইকবালের দেখভালের জন্য ঢাকায় ছিলেন। গতকালই তিনি সিলেটে ফিরে গেছেন।