রায়হান কবির
আওয়ার ইসলাম
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম থাকার কারণে শীতের সময় বদলে যাওয়া আবহাওয়ায়, শিশুরা খুব সহজেই বিভিন্ন অসুখবিসুখে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিশুরা সাধারণত ব্রঙ্কাইটিস, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি, ঠান্ডা জ্বর প্রভৃতিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আপনি আপনার শিশুকে এই সকল শীত জনিত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন। এজন্য রোগের কারণ, প্রকৃতি ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনার জানা জরুরি।
শীতে শিশুদের কী কী রোগ দেখা যায়?
মূলত এ সময় শিশুরা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা, কাশি, সর্দি এবং এ্যাজমায় বেশি আক্রান্ত হয়। আর সঙ্গে সিজোনাল জ্বর তো রয়েছেই।
এসব রোগের লক্ষণ
ঠাণ্ডা অনেক দিন স্থায়ী হওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব, বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস নেয়া।
কারা বেশি আক্রান্ত হয়
সাধারণত আমাদের দেশের অপুষ্ট কম ওজনের শিশুরাই এ ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আর দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা সুষম খাদ্য এবং যত্নের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভোগে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম থাকে।
কীভাবে সতর্ক হতে হবে?
শিশু অসুস্থ হলে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে এবং নিয়মিত খাবার খাওয়াতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তার ঠাণ্ডা না লাগে। তাদের ধুলাবালি থেকেও দূরে রাখতে হবে। শিশু একটানা তিন দিনের বেশি অসুস্থ থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে ১৫ দিনের চিকিৎসায়ই শিশু ভালো হয়ে যায়। আর ভাইরাসজনিত জ্বরও ৩ থেকে ৫ দিনেই সেরে যায়। শিশুকে জন্মের পর থেকে সবগুলো টিকা সময় মতো দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
টিকার পাশাপাশি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়েও তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সবগুলো টিকা নিয়মিত দিলে শিশু বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পায় এবং তার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। শিশুকে শীতের পোশাক পরাতে হবে। আর গোসলের সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। সাধারণ সর্দি, কাশিকে অবহেলা না করারও পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।
পুরো শীতকাল জুড়েই শিশুকে সুস্থ রাখতে কি কি করবেন-
শীতে শিশুরা অতিরিক্ত ভিটামিন সি পাবে এমন খাবার দিতে হবে। নবজাতককে শীতের সময় গোসল না করানোই ভালো। তবে নরম কাপড় হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে।নবজাতক শিশুকে নরম সুতি কাপড়ে জড়াতে হবে। তার হাত-পায়ে গরম মোজা দিয়ে রাখতে হবে। এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদেরও উলের বা মোটা সুতির গরম কাপড়ে রাখতে হবে। তবে বাচ্চার শরীর ঘেমে যায়, এমন কাপড় যেন না হয়।
একটু বড় শিশুকে অবশ্য গোসল করাতে হবে, নইলে চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে প্রতিদিন না করিয়ে দুই দিনে একবার গোসল করালে ভালো হয়। গোসল করালে শরীর ঝরঝরে হবে, শিশুর আরাম লাগবে। গোসলের পর ভালো লোশন বা ক্রিম লাগিয়ে দিতে হবে। গোসলের সময় চুল টেনে চুলের গোড়ার ময়লা পরিষ্কার করে দিতে হবে। এতে মাথার ত্বক সুস্থ থাকবে।
আরএম