এম ওমর ফারুক আজাদ
ফটিকছড়িতে এইচএসসি ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে। গতকাল প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ উপজেলা থেকে এবার ১ হাজার ৯ শ ৩৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৯ শ ৪৬ জন। অকৃতকার্যের সংখ্যা ৯ শ ৯২ জন। উপজেলার সাতটি কলেজের মোট পাসের হার ৪৮.৮১। যা চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৬১.০৯। উপজেলার সাতটি কলেজ থেকে মাত্র ৩ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উপজেলা সদরের ফটিকছড়ি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ শত ৭০ । পাস করেছে ৩ শত ৩৭ । পাসের হার ৩৮.৭৪। কলেজটি থেকে একজন শিক্ষার্থীও জিপিএ-৫ পাননি।
নানুপুর লায়লা কবির ডিগ্রী কলেজ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ শত ২৪। পাস করেছে ২ শত ২৩ । পাশের হার ৫২.৫৯। কলেজটি থেকে দুইজন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ঈছাপুর বিএমসি কলেজ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ শত ৪৩। পাস করেছে ৭০ জন। পাসের হার ৪৮.৯৫। কলেজটি থেকে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি।
গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০। পাস করেছে ৪৭ জন। পাসের হার ৪৭.০০। কলেজটি থেকে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি।
নারায়নহাট কলেজের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ শত ৭। পাস করেছে ৭৭ জন। পাশের হার ৩৭.২০। কলেজটি থেকে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি।
হেঁয়াকো বনানী কলেজে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ শত ৮৪। পাস করেছে ৫৩ জন। পাসের হার ২৮.৮০। কলেজটি থেকে একজন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
পূর্ব ধলই খাদিজা মালেক স্কুল এন্ড কলেজের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ জন। পাস করেছে ৮ জন। পাসের হার ৮০.০০। কলেজটি থেকে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি।
কেন এমন ফলাফল বিপর্যয় সে বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘অতীতে ঢালাওভাবে নাম্বার দিয়ে পরীক্ষার্থীদের পাসের হার বাড়ানো হতো। এবার তা হয়নি। যেসব শিক্ষার্থী পূর্বের ন্যায় নাম্বার দেওয়া হবে ভেবে পড়ালেখায় অমনুযোগী ছিল তারাই ফেল করেছে।’
ফলাফলের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে ফটিকছড়ি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ৮ শত ৭০। পাস করেছে ৩ শত ৩৭। ফেল করেছে ৫ শত ৩৩ জন পরীক্ষার্থী। পাশের হার ৩৮.৭৪। একদিকে গড় পাসের হার কম, অপরদিকে একজন শিক্ষার্থীও জিপিএ -৫ না পাওয়াতে কলেজটি নিয়ে ফেইসবুকসহ সোস্যাল মিডিয়াতে সমালোচনার ঝড় বয়ছে।
কেন এমন ফলাফল বিপর্যয় তা জানতে মুঠোফোনে কথা হয় অধ্যক্ষ আবদুর রহিমের সাথে।
তিনি অকপটে বলেন, ‘ফলাফল বিপর্যয়ের প্রধান কারণ রাজনীতি। আমরা নিয়মিত শিক্ষার্থী থেকে নির্বাচনী পরিক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্যসহ মোট ৩০৪ জনকে সিলেক্ট করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের চাপে আমরা অনিয়মিতসহ বহু বিষয়ে ফেল করা ৯ শতের কাছাকাছি শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করতে বাধ্য হয়েছি । যারা সবাই ফেল করেছে।’