নারায়নগঞ্জ: নারায়নগঞ্জ জেলার মাদানী নগর মাহাদুস শাইখ ইদ্রিস আল ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আবু সাঈদ শেখ (২৪) ৬ দিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন। তার পরিবার এখনো কোনো সন্ধান পায়নি।
গত ৩ জুলাই সেমবার থেকে তিনি নিখোঁজ হন। মাওলানা আবু সাঈদ শেখ গোপালগঞ্জ শহর সংলগ্ন ঘোষেরচর উত্তপাড়া গ্রামের সৈয়দ আলী শেখের ছেলে।
তিনি নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মাদানী নগরের সি ব্লকের ২ নং রোডের, ৮৩ নং বাড়ির ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের ২ মাস আগে থেকে শিক্ষকতা করছেন। এ ছাড়া একই দিন বিকেলে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মোঃ শাহ আলম নিখোঁজ হয়।
এ ব্যাপারে সোমবার নিখোঁজ মুয়াজ্জিনের ছোট ভাই গোলাম রাব্বি গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। মুয়াজ্জিন হাফেজ মোঃ শাহ আলম গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার মাইজকান্দি গ্রামের শহিদ তালুকদারের ছেলে।
নিখোঁজ মাদরাসা শিক্ষকের চাচাত ভাই মাওলানা ফখরুল আলম জানান, ঈদের পরের দিন মাওলানা আবু সাঈদ ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসে। ছুটি কাটিয়ে গত ৩ জুলাই রোববার বিকেল ৩ টা ৩০ মিনিটে সে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন মোড় থেকে ফালগুনী পরিবহনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। লঞ্চে পদ্মা পার হয়ে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে বাসে উঠে সে তার বোন আসমা খানমের কাছে মোবাইলে ফোন দিয়ে কথা বলে।
মাদরাসায় পৌঁছে তাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে জানাবে বলে বলে কথা শেষে করে। ওই দিন রাত ১১ টার দিকে বোন আসমা খানম ও তার স্বামী হেমায়েত মুন্সি আবু সাঈদের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পায়। তারা বিষয়টি মাদ্রসা কর্তৃপক্ষকে জানালে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে তাকে হাসাপাতাল, ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেন।
তার পর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার তিনি (ফখরুল আলম) গোপালগঞ্জ সদর থানায় জিডি করতে গেলে সদর থানার ওসি মোঃ সেলিম রেজা তাকে জানান মুন্সিগঞ্জ থেকে আবু সাঈদ নিখোঁজ হয়েছে। তাই মুন্সিগঞ্জে জিডি করতে তিনি (ওসি)পরামর্শ দেন।
নিখোঁজ শিক্ষক আবু সাঈদের দুলাভাই গোপালগঞ্জ শহরের শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক হেমায়েত মুন্সি বলেন, রমজান ও ঈদের ছুটি পেয়ে ২০ রমজানের পর আবু সঈদ ঢাকার গুলশানের বড় মসজিদে ই’তেকাফে বসেন। ইতেকাফ শেষে ঈদের পরের দিন সে বাড়িতে আসে। ছুটি শেষে ৩ জুলাই সে কর্মস্থলে যোগ দিতে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পদ্মা পার হওয়ার পর আমার স্ত্রীর সাথে তার শেষ কথা হয়। ওই দিন রাত ১১ টার দিকে আমি ও আমার স্ত্রী ফোন দিয়ে তার মোবাইল বন্ধ পাই। পরে বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানাই। আমরা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাইনি।
ওই মাদরাসার হিসাব বিভাগের শিক্ষক ইখতিয়ার রায়হান মুঠফোনে বলেন, গত ২ মাস আগে আবু সাঈদ এ মাদরাসায় যোগ দেয়। ঈদের ছুটিতে তিনি গ্রামের বাড়িতে যান। গত ৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে আবু সাঈদ তার বাড়ির লোকজনের সাথে মোবাইলে কথা বলে। তারপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি আমাদের জানানোর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল ও যাত্রবাড়ি থানায় খোঁজ নেই। বুধ ও বৃহস্পতিবার স্বজনদের সাথে বিভন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ সেলিম রেজা বলেন, মওলানা আবু সাঈদ মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ফোন করে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। তারপর থেকে সে নিখোঁজ হয়েছে। তাই বিধি আনুযায়ী মুন্সিগঞ্জে এ ব্যাপারে জিডি করতে হবে। আবু সাঈদের স্বজনরা শুক্রবার জিডি করতে থানায় আসলে তাদের মুন্সিগঞ্জে জিডি করার পরামর্শ দেই।
সাভারে দুই মডেলকন্যাকে গণধর্ষণ