নাজিম উদ্দিন: যুগে যুগে ছাত্র ও যুবসমাজ ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানদের বিভিন্ন যুদ্ধে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুবকরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে। যুবসমাজ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে।
‘সত্যের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিরোধ’ এর মধ্যেই মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব নিহীত। এ কাজ সাধ্যানুযায়ী সর্বাত্মকভাবে আঞ্জাম দেওয়া প্রত্যেক মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। বিশেষ করে ছাত্রসমাজ এ কাজের যোগ্য সৈনিক কারণ ছাত্রসমাজই দেশ ও জাতির সক্রিয় ও কার্যকর জনশক্তি। এরা দেশের অমূল্য সম্পদ, ভবিষ্যত কর্ণধার। ছাত্রদের ক্লান্তিহীন শ্রম, অপ্রতিরোধ্য শক্তি এবং তীক্ষ্ম মেধার সঠিক চর্চা ও প্রয়োগের ওপর নির্ভর করে দেশের গতি-প্রকৃতি, সুখ-সমৃদ্ধি তথা জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ছাত্রদের শ্রম দেশগড়ায় ও মানব কল্যাণে প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের শক্তি অন্যায়-অবিচার-জুলুম তথা বাতিলের বিরুদ্ধে আর তাদের মেধা সত্য অন্বেষণ, দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়ার মাধ্যমেই সার্থক হয়ে ওঠে।
বারবার আমাদের সরকার পরিবর্তনে ছাত্রসমাজের বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকলেও শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ কখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হয়নি তাদের দাবি-দাওয়ার বাস্তব প্রতিফলন। যার কারণে ছাত্রদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা। তারা আস্থা হারিয়ে ফেলছে নৈতিকতা বিবর্জিত এই ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি। তাদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে যুদ্ধংদেহী মনোভাব। ছাত্রদের এহেন ভূমিকার কারণে সমগ্র জাতি আজ দিশেহারা এবং তাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আতংকিত।
এই ঘুনেধরা সমাজের ছাত্র যুবকদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে আর্দশ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে কুরআন-সুন্নাহ চর্চার বিকল্প নেই।মাহে রমজানের শিক্ষায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ এ ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
ছাত্র সমাজকে ধংষের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে কুরআনের শিক্ষার বিকল্প নেই।একমাত্র কুরআন ও সুন্নাহর চর্চার মাধ্যমেই অশান্ত পৃথিবীকে শান্ত করা সম্ভব। ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব; এ জন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দো্লনে ছাত্র ও যুবসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
আজ নরগীর জিইসি মোরস্থ হোটেল জামানে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম নগরেরর উদ্যোগে আয়োজিত "সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও কায়েমী স্বার্থবাদ মুক্ত সমাজ গঠনে রমজানের ভূমিকা শীর্ষক" আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জি এম রুহুল আমিন এসব কথা বলেন।
নগর সভাপতি মুহা.নিজাম উদ্দিনে এর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নুরুল বশর আজিজির সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী অান্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সেক্রেটারি জননেতা আল ইকবাল, ওমরগণি এমইএস কলেজের অধ্যাপক ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন, তা'লীমুল কুরআন কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাওলানা হাফেজ মুহাম্মাদ তৈয়্যব,মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী,মুফতি হুমায়ন কবির খালভী, ডক্টর মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান,মাওলানা এনামুল হক মাদানী, মাওলানা বদিউল আলম।এতে আরো উপস্থিত ছিলেন নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা তাদের আলোচনায় বলেন ছাত্র সমাজকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি সমাজে গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। দুর্নীতি মুক্ত দেশ বিনির্মাণ এ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।