শাহনূর শাহীন: বেলুচিস্তানের বাসিন্দা জান মোহম্মদের ছেলেমেয়ের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৩৮ পেরিয়েছে। অপেক্ষা করছেন একজন ভালো মেয়ের। করবেন চতুর্থ বিয়ে। তবে ভাল মেয়ে পাচ্ছেন না। ভালো মেয়ে পেলেই চতুর্থ বিয়ে করবেন জান মোহাম্মদ। এর কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, একশো সন্তানের বাবা হতে চান জান মোহাম্মদ।
একশোটি বাচ্চার বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখা জান মোহম্মদের ব্যাখ্যা, মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়া উচিত। তাতে গোটা বিশ্ব ভয় পাবে।
৫৭ বছরের বয়সী গুলজার খান পাকিস্তানের বান্নু শহরের বাসিন্দা। তাঁর তিনটি স্ত্রী। ৩৬টি বাচ্চার পরেও তৃতীয় স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ৩৬টি ছেলেমেয়ের পরেও সন্তান নেয়ার প্রয়োজনীয়তার যুক্তি তুলে ধরে গুলজার খান বলেন, “আল্লাহ গোটা দুনিয়া মানুষের জন্য বানিয়েছেন। কেন আমি বাচ্চা হওয়ার এই প্রক্রিয়া থামাব?
তিনি বলেন, ইসলামের পরিবার পরিকল্পনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা শক্তিশালী হতে চাই।” ২৩টি বাচ্চাকে পাশে বসিয়ে রসিকতা করে গুলজার বলেন, “ওদের ক্রিকেট খেলার জন্য বন্ধুদের দরকার হবে না। ওরা নিজেরাই একাধিক টিম করতে পারবে।
গুলজার খানের ভাই মস্তান খান ওয়াজির ছেলে মেয়ের সংখ্যা ২২টি। তিনিও বিয়ে করেছেন তিনটি। ছেলে মেয়ের সংখ্যা ২২ জন হলেও নাতি-নাতনি কতজন তা জানেন না ওয়াজির খান।
ওয়াজিরের ভাষায়, আমার নাতিনাতনির সংখ্যা অনেক। তবে সেটা কত তা বলতে পারব না। তাঁর কথায়, আল্লাহ তো বলেছেন তিনিই সব কিছু দেবেন। তাই তাদের বরণ পোষণ নিয়ে টেনশন করি না। তাঁকে বিশ্বাস করি আমি।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও সরকারের প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা যায় শিশু জন্মের হারে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে রয়েছ পাকিস্তান। গড়ে প্রত্যেক মহিলা তিনটি সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন এবং পরিসংখ্যন অনুযায়ি এই হার অপরিবর্তিত রয়েছে।
পাকিস্তানে বহুবিবাহ আইনসিদ্ধ হলেও বহু বিবাহের সংখ্যাকম বলেই দাবি পাক প্রশাসনের। খান পরিবারে বহুবিবাহের প্রচলন নেই। ১৯৯৮ সালে শেষ আদমশুমারিতে পাকিস্তানে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে তেরো কোটি। বর্তমানে সেটা বেড়ে দাড়াতে পারে ২০ কোটিতে। এমন অভিমত সেদেশের বিশেষজ্ঞদের।
পাকিস্তানে প্রায় ৬ কোটি মানুষ গরিব। বিশেষজ্ঞদের মতে পাকিস্তানের মতো দেশে জনবিস্ফোরণ হওয়াটা অর্থনীতির পক্ষে মঙ্গলদায়ক নয়।
এই অবস্থায় জনসংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে দুর্ভোগ বাড়বে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তারা। এজন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা।
তবে বিশেষজ্ঞদের এসব অভিযোগ ও মাতামত মানতে রাজি নন ওই তিন বাবা। তাঁরা বলছেন, আল্লাহ্ই তাদের সন্তানদের রিজিকের ব্যাবস্থা করবেন। এবং পৃথিবীর সমস্ত মানুষের রিজিক আল্লাহ তাআলাই ব্যাবস্থা করেন। ডন অবলম্বনে।
এসএস/