ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরসহ আটজন বিচারপতিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান।
বিচারপতি কারনান তার রায়ে বলেন,‘ওই আট বিচারপতি ১৯৮৯ সালের তফসিলি জাতি-উপজাতি নিপীড়ন আইন এবং ২০১৫ সালের সংশোধনী মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই তাদের পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হলো। ’
অভিযুক্তদের তালিকায় প্রধান বিচারপতি ছাড়াও রয়েছেন বিচারপতি দীপক মিশ্র, জে চেলাশ্বরম, রঞ্জন গগৈ, মদন বি লোকুর, পিনাকি চন্দ্র ঘোষ এবং কুরিয়ান জোসেফ। এছাড়া তাকে বিচারপতি হিসেবে কাজ করতে না দেওয়ায় বিচারপতি আর ভানুমতিকেও একই সাজা শুনিয়েছেন বিচারপতি কারনান।
সোমবার বিচারপতি কারনান কলকাতার নিউ টাউনের বাসভবন থেকে ১২ পৃষ্ঠার এ আদেশ জারি করেন। বিচারপতিদের পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে এই আটজন বিচারপতিকে ১ লাখ রুপি করে জরিমানাও করেছেন তিনি। এক সপ্তাহের মধ্যে দিল্লির খান মার্কেটে তফসিলি জাতি-উপজাতি সংক্রান্ত জাতীয় কমিশনে সেই টাকা জমা দিতে হবে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রায়ে আরও বলা হয়, ক্ষতিপূরণ হিসেবে কারনানকে ওই অভিযুক্ত বিচারপতিরা ১৪ কোটি রুপি দেবেন। বিচারপতিদের বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজ করা থেকে বিরত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের পাসপোর্টও আদালতের কাছে জমা দিতে বলা হয়। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয় ওই রায়ে।
উল্লেখ্য, ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু করে এবং তাকে বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজ করা থেকে বিরত করা হয়।
এর আগে, নিজে তফসিলি জাতিভুক্ত হিসেবে তার বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হচ্ছে বলে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন বিচারপতি কারনান। সেই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। পরে বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলেন সুপ্রিম কোর্ট।
কারনানেরর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। গত ৪ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চার সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে এলে তিনি তা করাতে অস্বীকার করেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া