বারান্দায় বসে খেলা করছিল পাঁচ বছরের শিশু সুমাইয়া। মা ঘরের ভেতর বসে কোরআন তেলোয়াত করছিলেন। এমন সময় আসে ওই বাসার পুরনো ভাড়াটিয়া অথৈ আক্তার বৃষ্টি। খোঁজ করে বাড়িওয়ালা হাছনা হেনার। না পেয়ে বারান্দায় শিশু সুমাইয়ার সঙ্গে বসে কথা বলতে থাকে বৃষ্টি। ঘরের ভেতর থেকে তাদের কথা শোনেন সুমাইয়ার মা মুন্নী আক্তার। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও তিনি ভাবতে পারেননি, এই নারী যাওয়ার সময় তার মেয়েকে চুরি করে নিয়ে যাবেন। কোরআন তেলওয়াত করছেন বলে ওই নারী ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। তারপর সুযোগ বুঝে সুমাইয়াকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান। গত ২ এপ্রিল বিকেলে কামরাঙ্গীরচরের বড়গ্রামে চুরি হয় পাঁচ বছরের শিশু সুমাইয়া।
সুমাইয়ার মা মুন্নী আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি বিকেলে বিছানায় বসে কোরআন শরীফ পড়ছিলাম। অথৈ আক্তার বৃষ্টি বাড়িওয়ালার খোঁজ করে। পরে বারান্দার মেঝেতে বসে সুমাইয়ার সঙ্গে কথা বলে। আমি বুঝতেও পারি নাই তার মনে এইসব ছিল। মুন্নী আক্তার বলেন, আমি কোরআন পড়ছিলাম বলে বৃষ্টি নিজেই দরজাটা বন্ধ করে দেয়। কোরআন পড়ছিলাম বলে ডিস্টার্ব হতে পারে এজন্য দরজা লাগিয়ে দেয়। আমি কোরআন পড়া শেষে মেয়েকে ডাকাডাকি করি। ওর সাড়া না পেয়ে রাস্তায় গিয়ে খুঁজি। তখনই আমার সন্দেহ হয়।
বাড়িওয়ালী হাছনা হেনা বলেন, ঘটনার দিন বৃষ্টি নাকি তাকে খুঁজতে এসেছিল। কিন্তু সেসময় তিনি মেয়েকে নিয়ে কোচিং সেন্টারে গিয়েছিলেন। বাসায় ফিরে তিনি সুমাইয়ার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। হাছনা হেনা বলেন, সুমাইয়া খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। কিন্তু গলির মুখের বাইরের রাস্তায় বেরোলেও বেশি দূরে যেত না। সবার সঙ্গে মিশতো। সারাক্ষণ সবার সঙ্গে দুষ্টুমি করতো। মিষ্টি চেহারার মেয়েটির জন্য সবার মন খারাপ হয়ে আছে।
শিশুটিকে বাসা থেকে ফসুলিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন শিশুটির বাবা জাকির হোসেন। এরপর প্রায় ২৪ দিন পেরিয়ে গেছে কিন্তু শিশুটিকে উদ্ধার বা শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া বৃষ্টিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, র্যাব, পিবিআই কাজ করছে। সবাই আমরা একযোগে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছি। ওসি বলেন, আমরা হয়তো খুব শিগগিরই ভালো এক খবর দিতে পারবো।
[বাবার কবরের উপর ছেলের ঝুলন্ত লাশ!]
[পাক-ভারত সীমান্তে অতিরিক্ত যুদ্ধ বিমান মোতায়েন]
এসএস/