সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর ইমামকে মালদ্বীপে লালগালিচা অভ্যর্থনা মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করলে আমাদের জীবন আলোকিত হবে : ধর্ম উপদেষ্টা বর্তমানে ‘উলূমুল হাদিস’-এর প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের মতো সম্প্রীতি আশপাশের দেশে খুঁজে পাবেন না: ধর্ম উপদেষ্টা ‘গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানো উম্মাহর আবশ্যিক দায়িত্ব’ নারী কমিশনের প্রস্তাবে পতিত স্বৈরতন্ত্রের সুযোগ: গাজী আতাউর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভবনের স্বীকৃতি পেল মসজিদুল হারাম ‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নারী সমাজের জন্য চরম অবমাননাকর’ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়: খেলাফত মজলিস সরাসরি ঢাকা-রিয়াদ ফ্লাইট চালু করল ইউএস-বাংলা

বি-বাড়িয়ায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় বিশ্বের বৃহত্তম 'ওয়াই' সেতু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তিতাস নদীর ত্রিমোহনার দুই অংশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া ও চরলহনিয়া, অপরটি পশ্চিম অংশে কুমিল্লার রামকৃষ্ণপুর বাজার।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার তিন উপজেলার এই সীমান্তবর্তী তিতাস নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘ওয়াই সেতু’। এখন শুধু  আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা।

সেতুটি যে কোনো দিন যে কোনো সময় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনটাই জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম এমপি। স্বপ্নের এই সেতু চালু হলে পাল্টে যাবে চারদিকে নদীবেষ্টিত বাঞ্ছারামপুরের চেহারা। নদী পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষার প্রহর আর গুনতে হবে না এখানকার সাধারণ মানুষকে। অতি অল্প সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখন সময়ের ব্যাপার। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বের বৃহত্তর এই ওয়াই সেতুতে বদলে যাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বাঞ্ছারামপুরের অর্থনীতির চাকা। সেতুটি ওয়াই আকৃতির হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ওয়াই  সেতু’।

ত্রিমোহনার দুই অংশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া ও চরলহনিয়া, অপরটি পশ্চিম অংশে কুমিল্লার রামকৃষ্ণপুর বাজার বিভক্ত করেছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের লেভেলিংয়ের কাজ, ধোয়ামোছা, ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি সারাই ও রঙের কাজ। সেতুটি চালু হলে দুই জেলার তিন উপজেলার মধ্যে রচিত হবে সেতুবন্ধন। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে এলাকাবাসী ও সেতু সংশ্লিষ্টদের দাবি, সেতুটি বিশ্বের বৃহত্তম ওয়াই সেতু। তবে কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বের নয়, এশিয়ার সর্ববৃহৎ ওয়াই সেতু এটি। মূল সেতুর নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়কের কাজও শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসের যে কোনো সময় দিনক্ষণ ঠিক করে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানালেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নাভানা বিল্ডার্সের আওতায় ২০১১ সালের ১৬ জুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ৭৭১ দশমিক ২০ মিটার এবং প্রস্থ ৮ দশমিক ১০ মিটার। দৃষ্টিনন্দন এই সেতু নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর জমি অধিগ্রহণ খাতে খরচ সাড়ে ৯ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণের ফলে এলাকার যোগাযোগ ও বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। সেতুতে পাইল হয়েছে ৩০২টি। তিতাস নদীর ওপর এ সেতুর নির্মাণ শেষ হলে এটি চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহূত হবে।

সেতুটি নির্মাণের ফলে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ স্বল্প সময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। তাদের আর চৌদ্দগ্রাম কিংবা গৌরীপুর হয়ে ঢাকা যেতে হবে না। অন্যদিকে লাঘব হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও কুমিল্লার মুরাদনগর, তিতাস, হোমনা, চান্দিনার লাখ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে কমে আসবে দু-তিন ঘণ্টা সময়। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম জানান, সেতুটি নির্মাণের ফলে মুরাদনগর-কুমিল্লা ও ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যোগাযোগ সহজ হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-ঢাকার বিকল্প পথ হিসেবেও ব্যবহূত হবে এ সেতু। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। আমরা চেষ্টা করছি, যেন প্রধানমন্ত্রী নিজে সরাসরি এসে এই ‘ওয়াই সেতু’ উদ্বোধন করেন। এলাকাবাসীরও দাবি এটি। ’ তিনি বলেন, কুমিল্লা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প পথ হিসেবে বাঞ্ছারামপুরকে ব্যবহার করার স্বপ্ন ছিল দীর্ঘদিনের। আর সে স্বপ্ন থেকেই এই ওয়াই সেতু।

এসএস/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ