নওগাঁর সাপাহারে মৃত্যুর দেড় বছর পর বিলকিস বেগম (২৮) নামের এক মহিলার মৃতদেহের হাড়গোড় কবর থেকে তুলে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার অনাথপুর গ্রামের একটি কবর স্থান থেকে ওই মহিলার লাশের হাড় গোড় গুলি তোলা হয়।
সূত্র জানায়, ১৯৯৮সালে উপজেলার ওই গ্রামের মোঃ আব্দুল কাদেরের মেয়ে বিলকিসে সাথে একই গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে হাফেজ মোঃ তোফাজ্জ্বল হোসেনের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের ঘরে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জম্ম হয়।
হাফেজ তোফাজ্জ্বল সিলেট জেলা সদরের একটি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার সুবাদে তার স্ত্রী ওখানে গিয়ে কিছু দিন থাকার পর হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের ৩০জুলাই তার স্বামী তাকে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলামের নিকট চিকিৎসা করান।
এরপর তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৩ আগষ্ট তাকে জালালাবাদ রাজিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে ওই দিনই তাকে নর্থ ইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেখানে ১দিন চিকিৎসা করার পর ৪ আগষ্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৩টা ১৯মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পরে সেখান থেকে তার লাশ নওগাঁর সাপাহারে এনে গ্রামের বাড়ীর কবর স্থানে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে মৃত্যুর প্রায় দেড় বছর পরে মৃত বিলকিস বেগমের রেখে যাওয়া সন্তান নিয়ে জামাই তোফাজ্জ্বল ও শশুর আব্দুল কাদেরের সাথে ঝগড়া বিবাদ হয়ে উভয়ের মধ্যে সর্ম্পকের অবনতি হয়। শশুর তার মেয়ের মৃত্যুর ১ বছর ৩ মাস পরে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে নওগাঁ কোর্টে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর মৃত্যুর প্রায় দেড় বছর পরে মামলার স্বার্থে ও কোর্টের নির্দেশে গতকাল সোমবার দুপুরে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়ার ম্যাজিস্ট্রেসীতে কবর থেকে লাশের হাড় গোড় উত্তোলন করা হয়।
এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এম সামিরুল আলম, সাপাহার থানার ওসি রেজাউল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই আব্দুল হান্নান, তিলনা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোসলেম উদ্দীন, সাংবাদিকসহ এলাকার অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
কবর থেকে মাথার খুলি, মুখের দুই পাটির ২১টি দাঁতসহ প্রায় অর্ধশত হাড় গোড় উদ্ধার করে কবর স্থানেই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে হাড় গোড় গুলি পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এসএস/