রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ধর্ষণের শিকার নারী ইউপি সদস্যকে ঘরে নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তার স্বামী আব্দুল মান্নান। এরই মধ্যে তালাকের প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই নারী সদস্যকে পুলিশ রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তির পর তার স্বামী আব্দুল মান্নান তালাকের ঘোষণা দেন।
আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের হাতে স্ত্রীর ধর্ষণের ঘটনায় আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে। পুরো এলাকায় রটে গেছে তার স্ত্রী ধর্ষিতা একজন নারী। এ কারণে তাকে তালাক দেবেন।
তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে একটি বারের জন্যও ওসিসিতি দেখতে যাইনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আমার স্ত্রী একা কর্মরত নন। তার মতো আরো তিনজন মেম্বারসহ বেশ কয়েকজন নারী রয়েছেন। তাহলে অন্যদের বাদ দিয়ে আমার স্ত্রীকে কেন ধর্ষণের শিকার হতে হবে? তিনি এ বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না বলে জানান।
এদিকে স্থানীয়রা বলেন, যারা মানব সেবার নামে জনপ্রতিনিধিত্ব করতে এসে ইউনিয়ন পরিষদকে অপবিত্র করে তারা মানুষ নয়, তাদের বিচার হওয়া দরকার। এজন্য শনিবার ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার শিক্ষার্থী ও সুধী সমাজের ব্যানারে চন্ডিপুর পাকা রাস্তায় এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদের লাইব্রেরিতে এক নারী ইউপি সদস্যকে ধর্ষণ করেন আরেক ইউপি সদস্য এবং এতে সহায়তার অভিযোগে চেয়ারম্যানকে আটক করে এলাকাবাসী। এরপর এলাকাবাসী চেয়ারম্যান জাননাত আলী ও ঘটনার নায়ক ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিনকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
নারী ইউপি সদস্যকে ধর্ষণ: চেয়ারম্যান ও সদস্য গ্রেপ্তার
ধর্ষণের দায়ে সাত এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ ১০ জন কারাগারে
ধর্ষণের শিকার নারী ইউপি সদস্য পুলিশকে জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য আলালউদ্দিন তাকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে জরুরি কথা আছে বলে লাইব্রেরির কক্ষে নিয়ে যায়। কথামত ওই কক্ষে প্রবেশ করলে দরজা-জানালা বন্ধ করে প্রথমে কুপ্রস্তাব দেয় আলাউদ্দিন। এক পর্যায়ে প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার নামে তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই কক্ষের বাইরে তালা মেরে দেন চেয়ারম্যান।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী মাহামুদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন-সহ ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করে নারী সদস্যকে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার সকালে আটক মেম্বার-চেয়ারম্যানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে মহিলা মেম্বারকে তার স্বামী তালাক দেওয়ার যে আল্টিমেটাম দিয়েছেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
সূত্র: নতুন সময়