সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে চলছে হাহাকার। পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৭৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমির ধান। ফসল হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বিগত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও দুর্বল বাঁধ নির্মাণের কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে জানান তারা।
জমির ধান ঠিকভাবে পাওয়া গেলে কৃষক তিন লাখ ৮ হাজার ৭৮৭ মেট্রিক টন চাল পেতেন। ফসল হারিয়ে হাহাকার করছেন তারা। অনেক কৃষক রয়েছেন যাদের পরিবারের সারা বছরের সংসার খরচ চলে ধান বিক্রির টাকায়। তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে রয়েছেন ভোগান্তির মধ্যে।
সদর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ধান। জেলার প্রায় সবক’টি হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে বলে জানা যায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে।
এদিকে জেলার দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউপির ৩২০ হেক্টর জামির বর্ষাকালীন সবজির খেত নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ কৃষক জমির আলী বলেন, ‘ভাই, আমি এ বছর জমি চাষ করেছি ঋণ করে। সব ফসলতো পানিতে তলিয়ে গেছে, এ বছর একটি ধানও পাবো না। কীভাবে সংসার চালাবো, আর কীভাবেই বা ঋণের টাকা সোধ করবো, সে চিন্তায় আছি। ’
একই গ্রামের আরেক কৃষক মইনুল মিয়া বলেন, ‘শীতের সময় যদি হাওরের বাঁধ ঠিকমতো দেওয়া হতো, তাহলে আর এ দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হতো না। কিন্তু কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে বাঁধের মাটি গলে পানির সঙ্গে মিশে গেছে। ফলে সহজে বৃষ্টির পানি হাওরের ফসলি জমিতে ঢুকে পড়েছে। ’
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহিদুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। শাল্লা উপজেলার দিকে কিছু জমি রয়েছে সেখানে এখনও পানি ওঠেনি। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ জমিগুলোও রক্ষা পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দীন জানান, হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। সুনামগঞ্জে অতিমাত্রায় বৃষ্টি হওয়ার ফলে বাঁধের উপর দিয়ে পানি ঢুকে গেছে। বর্তমানে সুরমা নদীর পানিও তিন ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। -বিডি প্রতিদিন
‘গরুর গোশতের মতো দেশে মদ, নেশা, অশ্লীলতাও বন্ধ করুন’