আওয়ার ইসলাম: একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেছেন, দেশে দ্বীন ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সমন্বিতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা ছিল সংখ্যায় অল্প, যদিও তাদের হাকডাক ছিল বেশী। এ দেশের কৃষক শ্রমিক থেকে শুরু করে সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, গীর্জার পাদ্রী, কৃষক-শ্রমিক মাঝি সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। ২৫ মার্চের জঘন্য হত্যাযজ্ঞ সংঘঠিত হওয়ার পরপরই আমরা সেদিন পরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করি। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ছিলেন কর্নেল এম এ জি ওসমানী। ১৯৭১ সালে প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়। কারাবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সে সরকারের প্রধান। তার অনুপস্থিতিতে সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে মেজর জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের শুরুটাকে গুরুত্ববহ করে তুলেন।
তিনি বলেন, বলা হয় বাংলাদেশ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ। কিন্তু দেশে ৯০ ভাগ জনগণ মুসলমান হলে সুপ্রীম কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি বসে কিভাবে। খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও স্মারকের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ ২৪ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজীজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা ও স্মারকের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর অধ্যাপক এম কে জামান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন খেলাফত আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী, ড়েমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমদ মনি, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শফিউল আলম, মাওলানা নোমান মাযহারী, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো: আজিজুল হক, খেলাফত মজলিসের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল হাফিজ খসরু, মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হালিম, অধ্যাপক কে এম আলম, ডা: রিফাত হোসেন মালিক, হাফেজ মাওলানা নূরুল হক, খন্দকার সাহাব উদ্দিন আহমদ, আবুল হোসাইন, এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হুমাযুন কবির আজাদ, কাজী আরিফুর রহমান, মুহাম্মদ সেলিম হোসাইন প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর অধ্যাপক এম কে জামান বলেন, স্বাধীনতার সাথে ইসলামের কোন সংঘাত নেই। স্বাধীনতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত সকল ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে। পাকিস্তান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালীর অধিকার দেয়নি। এ দেশের মানুষ যখনই অধিকারের কথা বলেছেন তখনই তাদের রাষ্ট্রবিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠি এদেশের জনগণের উপর জুলুম চালায়। কিন্তু ইসলাম কখনো কাউকেই জুলুম করার এখতিয়ার দেয়নি। এখনো স্বাধীন দেশে অধিকারের কথা বললে জনগণের উপর জুলুম করা হচ্ছে। সভাপতির বক্তব্যে শেখ গোলাম আসগর বলেন, এক শ্রেনীর লোক মুক্তিযুদ্ধকে কুক্ষিগত করতে চায়। মুক্তিয্দ্ধু এ দেশের সকল শ্রেনীর মানুষের সম্মিলিত সংগ্রামের নাম। সকলের সম্মিলিত ত্যাগের ফসল হচ্ছে স্বাধীনতা। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী প্রকাশিত স্মারক ‘চেতনা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকার জন্যে ৬ জন মুক্তিযোদ্দাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা ড়্রহন করেন- খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শফিউল আলম( ঢাকা জেলা), খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর প্রশিক্ষন সম্পাদক ফয়েজুল ইসলাম( হবিগঞ্জ), শহীদ ওমর আলী হাওলাদারের পক্ষে ছেলে আমীর আলী হাওলাদার( বরিশাল), শহীদ আলকাছ হোসেনের পক্ষে ছেলে মনির হোসেন আকনজী(মাদারীপুর), শহীদ বীল নূরুল হক মিয়ার ছেলে মোস্তফা কামাল(ল²ীপুর(, ছায়েদ দরির ছেলে আতাইর রহমান( শরীয়তপুর) স্মারকের মোড়ক উন্মোচন ও সম্মামনা প্রদান করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল( অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক। সর্বশেষ দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা নোমান মাযহারী।
আরআর