মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মুসলিম সম্পত্তি দখল করতে ভারতের লোকসভায় ‘শত্রু সম্পত্তি’ বিল পাস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Indian mmmআওয়ার ইসলাম : ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় শত্রু সম্পত্তি (সংশোধনী ও বৈধকরণ) বিল পাস হয়েছে। ফলে দেশভাগের সময় যারা পাকিস্তান বা চীনে চলে গেছেন, ভারতে বসবাসকারী তাদের উত্তরাধিকারীরা আর তাদের সম্পত্তির দাবি করতে পারবেন না।

সংসদে ওই বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে কংগ্রেস নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী  অধীর রঞ্জন চৌধুরি অভিযোগ করেন, এই আইনের প্রভাবে বিশেষ করে মুসলমানরা আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে যদি কোনো সংশয় থাকে তাহলে সরকারের উচিত তার সমাধান করা। কিন্তু এর পরিবর্তে দেশপ্রেমের নয়া সংজ্ঞা তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সকলের সমানাধিকার রয়েছে এজন্য আমরা সকল অংশের কথা বলি।

মঙ্গলবার লোকসভায় কণ্ঠভোটে ওই বিলটি পাস হয়ে যায়। ৪৯ বছরের পুরানো আইনে এদিন পরিবর্তন আনল কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পরে ১৯৬৮ সালে এই আইন কার্যকর হয়।

উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে নিজ সম্পত্তির অধিকার নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধ ছিল রাজা আমির মুহম্মদ খানের। সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। তৎকালীন আইনের সুবাদে সেই মামলায় জয়ী হন মুহাম্মদাবাদের রাজা। তাই এবার সরকার  আইন সংশোধন করল। এই বিল পাসের আগে সরকারকে পাঁচবার অর্ডিন্যান্স জারি করতে হয়েছিল।

সংসদে তৃণমূলের সিনিয়র এমপি সৌগত রায় বলেন, ‘এখন অর্ডিন্যান্স রাজ চলছে। একটি বিলের জন্য সরকারকে পাঁচবার অর্ডিন্যান্স জারি করতে হয়েছে। এখন যদি মুহাম্মদাবাদের রাজার সম্পত্তি বেদখল করতে হয়, তবে লক্ষনৌতে গোলমাল বেধে যাবে।’

সিপিএমের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ওই বিলে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ এই বিতর্কের নিষ্পত্তিতে নিম্ন আদালতে যেতে পারবে না। সাধারণ মানুষের পক্ষে হাইকোর্টে যাওয়া খুবই কঠিন।’

 

কেবলমাত্র উত্তর প্রদেশেই এ ধরণের ১,৫১৯ টি সম্পত্তি রয়েছে যাদের মালিকানা  কেন্দ্রীয় বিল পাসে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে মুহাম্মদাবাদের রাজার উপরে। তার বাবা আমীর আহমদ খান ১৯৫৭ সালে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার স্ত্রী এবং ছেলে ভারতে থেকে গিয়েছিলেন। মুহাম্মদাবাদের রাজার কাছে উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে কমপক্ষে ৯৩৬ সম্পত্তি রয়েছে। নয়া বিল পাসের ফলে তার পরিবারের ওই সকল সম্পত্তির উপর থেকে মালিকানার অধিকার শেষ হয়ে যাবে। এবার থেকে ওই সব সম্পত্তির মালিকানা চলে আসবে কেন্দ্রীয় সরকারে হাতে। এ জন্য ভারতে শত্রু-সম্পত্তির জিম্মাদার হিসেবে একটি পৃখক দফতর গঠন করা হয়েছে। তারাই শত্রু-সম্পত্তি সামলাবে।

উত্তর প্রদেশে ১৫১৯ টি শত্রু সম্পত্তির মধ্যে কমপক্ষে ৬২২ টি সম্পত্তিকে সরকার নিযুক্ত অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। ৮৯৭ টি সম্পত্তিতে সংরক্ষক নিযুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

মুহাম্মদাবাদের রাজপরিবারকে কাজী নাসরুল্লাহর বংশধর বলে মনে করা হয়। কাজী নাসরুল্লাহ বাগদাদের খলিফার প্রধান কাজী ছিলেন। ১৩১৬ সালে তিনি দিল্লি সালতানাতের সুলতান শাহিব উদ্দিন ওমর খিলজির দরবারে রাষ্ট্রদূত হিসেবে এসেছিলেন।

সূত্র : পার্সটুডে

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ