আওয়ার ইসলাম: শুক্রবার শুরু হতে যাচ্ছে ৫২তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব।
ইতোমধ্যে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমার মাঠ প্রস্তুত হয়েছে ।ময়দানজুড়ে টাঙানো হয়েছে চটের সামিয়ানা। সম্পন্ন হয়েছে জেলাওয়ারি খিত্তার ভাগ।
বিদেশি মেহমানদের জন্য মাঠের পাশে তৈরি করা হয়েছে টিন শেডের আলাদা থাকার জায়গা।জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
ইজতেমার মাঠে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন। প্রথম পর্বে ১৬টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ইজতেমার মাঠের সার্বিক কাজের প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন এবং দ্বীনের মেহনত কায়েমের লক্ষ্যে জোড় ইজতেমা থেকেই মুসল্লিরা দলে দলে ভাগ হয়ে ইজতেমার মাঠে কাজ করেছেন। প্রতি বছরের মতো স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে প্রস্তুতিমূলক কাজ করেন।’
রোববার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয়ে ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতিসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
ইজতেমা এলাকার পরিবেশ উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা, বস্তি ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, মুসল্লিদের অজু, গোসল, রান্নাবান্না, খাবার পানি সরবরাহ, বিদেশি মেহমানদের জন্য টয়লেট ও গোসলখানা নির্মাণ, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, মশক নিধন ও দুর্গন্ধ দূরীকরণ, তুরাগ নদীতে পল্টুন ব্রিজ নির্মাণ, বিদেশি মেহমানদের তাবুতে গ্যাস সরবরাহ, টেলিফোন সংযোগ প্রদান, বিশেষ ট্রেন ও বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা, খাদ্যে ভেজাল রোধ এবং দৃব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসন, ইজতেমাস্থলে ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণ, পিএ কভারেজ, আপত্তিকর সিনেমা পোস্টার অপসারণ, ফুট ওভার ব্রিজ সংস্কার, গাছপালা সংরক্ষণ, কন্ট্রোলরুম স্থাপন।
এবারও ৫ স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা, মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবায় ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স, বিআরটিসির ৩৫০টি বাসসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ইজতেমা সফল ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে এসেছেন এবং তাদের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, ইজতেমা ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে র্যাবের জন্য ৯টি ও জেলা পুলিশের জন্য পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমায় আসা- মুসল্লিদের অজু গোসল, পয়োনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য স্থাপিত ১২টি নলকূপ থেকে ১২ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রতিদিন ঘণ্টায় তিন কোটি ৫৫ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহ করা হবে। ইজতেমার মাঠে মশক নিধনের জন্য ২৪টি ফগার মেশিন কাজ করবে।
এবারের ইজতেমায় ৩২টি জেলা অংশ নেবে। এর জন্য পুরো ময়দানকে প্রথম পর্বে ২৭টি খিত্তা ও দ্বিতীয় পর্বে ২৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
এবারের ২ পর্বের ইজতেমায় অংশ নেয়া ৩২ জেলা হলো- গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গোপলগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোর, বাগেরহাট, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, বরিশাল ও সাতক্ষীরা।
ডিএস