আওয়ার ইসলাম: ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপে দলটি ৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছে।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫ টায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে দলটির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম এবং কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম।
ইসলামী আন্দোলনের দেয়া ৭ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে
১. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত সকল দলের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন এবং পেশী শক্তি, কালো টাকা, দলীয় প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন পদ্ধতির নিমিত্তে একটি আইনি কাঠামো প্রণয়ন করা।
২. পরীক্ষিত প্রশাসনিক দক্ষতা, সততা, ন্যায়পরায়নতা ও নীতির প্রশ্নে আপোষহীন, নিরপেক্ষতাসহ জবাবদিহীতায় যারা মহান আল্লাহ তায়ালা, দেশের জনগণ ও নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ এমন আইনানুগ জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিবেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে উপরোক্ত গুণাবলী বজায় থাকে সে ব্যাপারে নিবন্ধিত দল সমূহের সাথে পরামর্শ করে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
৩. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কার্যকর সংসদ ও জাতীয় সংহতি প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত হলো কালো টাকা, পেশী শক্তি ও দলীয় প্রভাবমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ লক্ষ্যে বিশে^র উল্লেখযোগ্য দেশসমূহের নির্বাচন পদ্ধতির ন্যায় এ দেশেও “সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক” (চ.জ) নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৪. নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন এবং শক্তিশালী করতে হবে। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে কিংবা সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যর্থ হলে এবং নির্বাচনকালীন পক্ষপাতদুষ্ট প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় এনে জবাবদিহীতার জন্য আইনী কাঠামো প্রণয়ন করা।
৫. অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দান না করা। কারণ, অবসরপ্রাপ্তদের শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তা অনেক ক্ষেত্রে দূর্বল হয়; যার বাস্তবতা বিগত দিনে দেশবাসী লক্ষ্য করেছে। যার কারনে বার বার নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত হয়েছে।
৬. জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের আলাদা সচিবালয় গঠন করা। নির্বাচনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এর আওতাভূক্ত করা।
৭. নির্বাচন কমিশনকে এমন ক্ষমতা দিতে হবে যে, কোন দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠন সমূহের অধিকাংশ নেতা এবং কর্মীরা যদি দূর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ও মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয় এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাদের যেন দলীয় নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা।
বৈঠক শেষে দলের আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৫ জানুয়ারির মত একতরফা প্রহসনের নির্বাচন দেশবাসী চায় না। আগামীতে যাতে এধরনের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি না ঘটে এর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ফলে জাতীয় রাজনীতিতে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সে সঙ্কট সমাধানে জাতির অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতির গঠনমূলক উদ্যোগ ফলপ্রসু হতে পারে।
আরআর