আওয়ার ইসলাম:হল-মার্ক গ্রুপের জালিয়াতি থেকে সোনালী ব্যাংক আংশিক দায়মুক্ত হচ্ছে। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে করা অন্য ব্যাংকগুলোর মামলা তুলে নিতে আজ নির্দেশ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে হলমার্কের পাওনা টাকা চেয়ে মামলা দায়ের করেছে আটটি ব্যাংক। এ জালিয়াতির মাধ্যমে খোয়া যায় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে সরাসরি ঋণের মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। বিল ও বন্ডের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের গ্যারান্টিতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আরও ২ হাজার ২০২ কোটি টাকা নেয় হল-মার্ক গ্রুপ।
তবে বিলের মেয়াদ পূর্তির পর ওইসব অর্থ সোনালী ব্যাংক পরিশোধ করছিল না। ব্যাংকটি উল্টো দাবি করে, তারা এত বিলের বিপরীতে কোনো গ্যারান্টি দেয়নি। পরে ব্যাংকগুলো তথ্যপ্রমাণসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে নালিশ জানায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কাছে থাকা সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে কেটে ব্যাংকগুলোকে ৬৬৭ কোটি টাকা পরিশোধ করে। তারপরও ১ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা বকেয়া। সেই অর্থও পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংককে চাপ দিচ্ছে।
এদিকে বিল ও বন্ডের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ না করায় বিভিন্ন ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে। এমনকি যেসব বিলের মূল অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে সেগুলোর সুদও দাবি করছে ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হল-মার্ককে দেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোরও গাফিলতি আছে। এর দায় সবটাই সোনালী ব্যাংকের ওপর চাপানো যায় না। তাই সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়া এবং পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে কোনো সুদ দাবি না করার জন্য অন্য ব্যাংকগুলোকে বলবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আজ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের নিয়ে ব্যাংকার্স সভায় এই নির্দেশনাটি জানিয়ে দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে হল-মার্কের পাওনা টাকা চেয়ে মামলা দায়ের করেছে রূপালী, উত্তরা, যমুনা, বেসিক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, প্রিমিয়ার, এনসিসি ও শাহজালাল ব্যাংক।
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের মে মাসে অনিয়মের তথ্য উদ্ঘাটনের সময় হল-মার্কসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ছিল তিন হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। এসব অর্থের মধ্যে কিছু আদায়ের পর বর্তমান পাওনা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। হলমার্কের কাছে পাওনার বিপরীতে সোনালী ব্যাংক এর মধ্যে এক হাজার ২২৯ কোটি টাকা অবলোপন করেছে। এসব অর্থের বিপরীতে জামানতকৃত সম্পদ মূল্য মাত্র ৪৭৩ কোটি টাকা।
ডিএস