মোক্ষদাবক্ষয়
আসমানি কুসুমের কল্পিত সারি
হৃদস্থ ভাবনার আকুলি শকট
চক্রে চক্রে সংগ্রামোত্তরিত
নবতর পাঠরত প্রনীত সোপান।
দেহাভ্যন্তরে উচ্ছল ছল কালো
বিবশিত শয়ানে স্বামীর সোয়াদ
বাজে রমণীর পৃথুলতর শইল্যে।
আহা! কি মথন তার সুড়সুড়ানির।
এখানে এভাবে নিথরিত স্বপনে
কষ্টিপাথরে মাপা রজত স্বর্ণে
শ্রেণিতে শ্রেণিতে মালাউনে অচ্ছুতে
আবিল আবিল অনাবিল অনটনে
ক্রমশ বেড়ে চলে দয়িতার দিবা
ঋণ, বিশ্বতে শ্রেয়োলাভ করে লস।
সুকান্ত র্যাবো
র্যাবো আঠারো বছরে কবিতা লেখা ছেড়েছিলেন,
সুকান্ত বেচেইছিলেন মাত্র একুশ বছর।
র্যাবোর কি কবিতা ছাড়ার পর আর বাঁচা হয়েছিলো?
ভ্যান্ডালিজমে আক্রান্ত র্যাবো সে বয়সেই কামস্বামী হয়ে উঠেছিলেন ভেরলেনের,
আর সুকান্ত তখন মাত্র পৃথিবীকে সাজিয়ে তুলতে চাচ্ছিলেন শিশুদের সংগঠন আর অনাহারি দীন জীবন যাপনে।
সিম্বলিজমের সম্রাট ছিলেন র্যাবো আর দেশলাই কাঠি,লালমোরগ
প্রভৃতিকে স্থায়ী মার্ক্সীয় সিম্বল করে ঘুমুতে চললেন সুকান্ত।
অতীন্দ্রীয় জগতের এমন সব প্রদীপন রেখে
গেছেন র্যাবো বোদলেয়ারে
কিছুটা প্রভাবিত হয়ে, ধাঁধাঁ উত্তুঙ্গ তাঁকে তুলেছে ধরে।
সুকান্ত তখন আউড়াচ্ছেন, ক্ষুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়।
সুকান্ত বাঙালি ছিলেন,কলোনিয়াল ক্যাপ্টিভিটি জাদুকর
সামাদের মতোই কি তাঁকে একান্ত বাঙালীদের করে তুলেছে?
পৃথিবী ছোট্ট ছিলো তার?
জাত এনলাইটেন্ড ফরাসীরা সমকামী কিংবা বিবাহিত ভেরলেনের
অসুখী সংসারের বুলেটে বিদ্ধ র্যাবোকে জেলখানা কিংবা হাসপাতাল
বাসের পর শয়তানের ঔপম্যে তাকালেও "নরকে এক ঋতু" লিখে
ফুঁৎকারে ভাসিয়ে দিলেন ওদের।
র্যাবো চললেন আঠারোয়ই নির্বাসনে,
সুকান্ত একুশেই অন্যলোকে।
যদি র্যাবো জন্মাতেন বাংলায় আর সুকান্ত ফরাসীতে?
র্যাবো কিংবা কিটস, প্লাথ কিংবা লোরকা
একেকজন শতাব্দী জন্মের দাবীদার!
আর সুকান্ত কিংবা জীবনানন্দও কী নয় তা???
নীলাম্বর
এই অসীম বিস্তৃর্ণ নীলরাশির সমুদ্র আমাকে তুমুল বিলোড়িত করে।
তাঁর রাশি রাশি নিল আমাকে বারবার সাঁতরাতে কিযে নিমন্ত্রণ করে!
বিপুল ব্যাপক এতোবড় জায়গাকে আমি দুহাতে ঘেটে দিতে চাই।
ভাঁজমান ভাসমান নিপাট লেপটানো রং তুলিতে আঁকা স্কেচে আমি
দৈহিক সম্ভোগ তুলতে সারারাত বালিশ এপাশ ওপাশ করি।
গিনসবার্গ নাকি কলকাতার কোন এক নদীতে নৌকা থেকে ঝাঁপিয়ে
সাঁতরে সাঁতরে নদীভোগ করেছিলেন খুব।
তিনি সমকামী হয়েও সুন্দরী নদীকে অমনভাবে জড়িয়েছিলেন।
এই এতো বিশাল আকাশ, আসমান, গগন দেখে আমি দুহাত উদাত্ত
করে পিঠে ব্যাগ ঝুলানো কোনো এক গ্রাম্য কিশোরী প্রজাপতির মতো
উপরমুখো হয়ে স্বয়ংক্রিয় হাসিতে মুখ ভরে তাঁর দিকে উড়ে উড়ে যেতে চাই।
আমি সারাদেহ,মন দিয়ে চটকে চটকে জ্বলনে প্রলেপ দিব যদি পারি কোনোদিন।
স্বপ্নমাতাল, মুখে কবিতা পঙক্তি ভাঁজতে ভাঁজতে উপাদানী প্রকৃতি
শুধু আকাশকে পায়।
ধুলা ওড়া, গোঁ গোঁ করে ধেয়ে আসা প্রেতিট্রাক
আর লাল লাল ইট সুরকীতে লাথি মারতে মারতে হঠাত যখন দৃষ্টি তাঁর নির্জলা,
নির্মুক্ত আকাশকে বীক্ষণ করে তখন তা আকস্মিক দীর্ঘশ্বাসী প্রেমবানতা ডেকে আনে।
অথচ সেই বিশালত্বের মুকুর যখন আঁধারপ্লাবী, কোনো ফর্সা শিক্ষকের
নিকষিত আন্ধারি মুখের মতো হয়ে চিরায়ত রহস্যনিগূড়ে নিগড়িত হয়,
তখন তাকে এ কিশোরের কেমন এক অনিরুপিত ভয়!
জেএম