আওয়ার ইসলাম: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই পুলিশ কর্তৃক লংমার্চ কর্মসূচি বাধা দেয়াকে রহস্যজনক অভিহিত করে বলেন, শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করে সরকার কাদের খুশি করতে চায়? আমাদের লংমার্চ কর্মসূচি ছিল মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর বর্বরোচিত হামলা বন্ধ ও তাদের মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে। এমন একটি সর্বজনীন কর্মসূচিতে সরকারের বাধা দেয়ার ঘটনা রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনকারীদের উৎসাহিত করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি পল্টনের প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। আজ ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি দিয়েছিল দলটি। সকালে নেতাকর্মীরা জড়ো হওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করীম পল্টনে প্রতিবাদ সভার ঘোষণা দেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সকলের জমায়েত হওয়ার কথা থাকলেও ৩দিন পূর্বে পুলিশ প্রেসক্লাবে জমায়েত করতে নিষেধ করে। সে অনুযায়ী জমায়েতের নতুন স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল যাত্রাবাড়ি কাজলা এলাকায়। কিন্তু হঠাৎ করেই গতকাল রাতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লংমার্চ কর্মসূচি স্থগিত করার কথা বলা হয়। অথচ সারাদেশের লংমার্চগামী মানুষ নৌ ও সড়কপথে পূর্বেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে এসেছে। ভোর হওয়ার পূর্বেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার বাস, মাইক্রোবাস জড়ো হতে থাকে যাত্রাবাড়ি, কাজলাসহ আশপাশের এলাকায়। কিন্তু পুলিশ গাড়িগুলো সেখানে দাঁড়াতে না দিয়ে যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয়, এসময় যুবলীগের কর্মীদেরও পুলিশের সাথে মিশে লংমার্চগামী লোকদের হেনস্তা করে, একটি গাড়িও ভাংচুর করে। পুলিশের এহেন আচরনের প্রতিবাদ করলে পল্টন এলাকা থেকে আনুমানিক ২৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা-পুলিশ ও সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের দ্বারা বর্বরোচিত রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন ও দেশছাড়া করা অব্যাহত রেখেছে। তিনি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সকল প্রকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী সকল রোহিঙ্গাকে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ারও দাবী জানান। গণহত্যা ও ধর্ষণের বিচার এবং মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সামরিক অভিযান অথবা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান পীর সাহেব চরমোনাই। এজন্য তিনি বিশ্ব নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ ভুমিকা নেয়ার আহবান জানান।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সংগঠনের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ই্উনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নেছার উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মুফতি দেলাওয়ার হোসা্ন্যাইন সাকীসহ নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবাদ সভার বক্তব্য শুনুন ভিডিওতে
আরআর
পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের প্রতিবাদ সমাবেশ চলছে
লংমার্চে পুলিশের বাধা; পল্টনে সমাবেশের ঘোষণা