আওয়ার ইসলাম: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পেছনে মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি অবদান। ১৯৪৭ সালে মাওলানা শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলবী রহ. ভারতকে দারুল হারব রাষ্ট্র ঘোষণা না দিলে এদেশ স্বাধীন হতো না। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর এসে যারা ধর্মনিরপেক্ষতার ঘোষণা দেয় তারা আসল ইতিহাসকে গোপন করছে। স্বাধীনতার ঘোষণায় ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ৭৫ সালে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করা হয়। বিজয় হয়েছে একটি দেশের, ভূ-খন্ডের, স্বাধীন হয়নি এদেশের মুসলমানদের। ৭১-এ দেশের জনগণ যে আশা ও চেতনা নিয়ে জীবন দিয়ে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছে। কোন নাস্তিক-বেঈমানদের অবদান ছিল না। মুক্তিযোদ্ধারা বিসমিল্লাহ বলে এবং আল্লাহু আকবার বলেই গুলি চালিয়েছে। কাজেই ৪৫ বছর পর এসে জাতিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রুখে দাড়াবে।
১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ‘বিজয়ের ৪৫ বছর : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবনেতা কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, ছাত্রনেতা জিএম রুহুল আমীন, শ্রমিকনেতা হারুনুর রশিদ, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান শেখ, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মোঃ মোশাররফ হোসেন, এইচ এম মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা শেখ নূর-উন-নাবী, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন, মাওলানা মাসউদুর রহমান প্রমুখ।
বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে আলোচনা সভার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন ইসলামী সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর ইসলামী ও দেশাত্মকবোধক সংগীতে দর্শক মাতিয়ে তোলে।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মুসলমানদের অনৈক্যের কারণে বিশ্বব্যাপী তাগুতি শক্তিগুলো মুসলমানদের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তারে হিংস্র আঘাত করেই যাচ্ছে।
তিনি ১৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধে ইসলামী আন্দোলনের লংমার্চ কর্মসুচী সফলের জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, যে দেশের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে আজানের ধ্বনিতে, সেদেশের মানুষকে জঙ্গিবাদ ও আইএসের অপবাদ দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। স্বাধীনতা সংগ্রামে ঈমানদার জনতার অবদান স্বীকার করতেই হবে। যারা বিভিন্ন অজুহাতে জাতিকে বিভক্ত করতে চায় তাদের চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।
তিনি বলেন, মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের জনতাকে কায়েমী স্বার্থবাদের বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত আমাদের সহযোগিতা করছে বলে একদল লোক ভারতকে বন্ধু মনে করে অথচ সেই ভারতই বাংলাদেশের সীমান্তে প্রতি ৪দিনে বিএসএফকে দিয়ে একজন বাঙ্গালীকে গুলি করে হত্যা করছে।
আরআর