[ভারতের খ্যাতনামা ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর হামিদ মীরের একটি কলাম ছাপায়। কলামে হামিদ মীর ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবের সংখ্যাগরিষ্ঠতাসত্তে¡ও তার হাতে ক্ষমতা প্রদানের অস্বীকৃতিকেই মূলত ১৯৭১ সালের জন্য দায়ী করেন। আমরা এ কলামে তেতালিশের পরিবর্তে পঁয়তালিশ ব্যবহার করলাম।]
হামিদ মীর
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর যৌথ বিজয়ের স্মরণে বাংলাদেশে ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় ছুটি পালন করা হয়। বাংলাদেশে এ দিবসকে ‘বিজয় দিবস’ এবং ভারতে ‘ভিজয় দিভাস’ বলা হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আব্দুলাহ খান নিয়াজি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। দেশ বিভাজনের কারণে পাকিস্তানে ১৬ ডিসেম্বরকে শোকের দিন ভাবা হয়। সাধারণ পাকিস্তানিরা বিশ্বাস করতে চান যে, ১৯৭১ সালে ভারত বাঙ্গালী বিশ্বাসঘাতক শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় তাদের দেশ ভেঙ্গে দিয়েছে। অধিকাংশ পাকিস্তানি জানেন না যে, আওয়ামী লীগের মুজিব ১৯৬৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৎকালীন সামরিক একনায়ক আইউব খানের বিরুদ্ধে মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন করেছিলেন। অল্পসংখ্যক তরুণই জানেন যে, মুজিব ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিলেন। তবে তৎকালীন সেনাশাসক ইয়াহইয়া খান তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি।
হাটহাজারিতে শনিবার বৈঠক : আসতে পারে ঐক্যের ফর্মুলা
এ গুরুতর অবিচার তাকে বিদ্রোহ করতে বাধ্য করে। ইয়াহইয়া খান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের আদেশ দেন। কিন্তু লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাহিবজাদা ইয়াকুব আলী খান তার নিজের লোকদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগে অস্বীকৃতি জানান। তিনি রাজনৈতিক সমাধানের প্রস্তাব দেন এবং শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরবর্তীকালে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মুজিবের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। তাকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয় এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে করাচি বা লাহোরে প্রধান কারাগার থাকতে কেন মুজিবকে মিয়ানওয়ালিতে স্থানান্তর করা হলো? মুজিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে গ্রেফতার হন, পরে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে নিয়াজি টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হন। ঢাকায় নতুন কমান্ডিং অফিসার ছিলেন মিয়ানওয়ালির মানুষ। তিনি আনন্দিত ছিলেন যে, মুজিব তার নিজের এলাকায় কারারুদ্ধ ছিলেন। কিছু পাকিস্তানি এখনো তাকে ‘টাইগার নিয়াজি’ ডাকতে পছন্দ করেন। আমি ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর উর্দু পত্রিকা দৈনিক দুনিয়াতে একটি প্রবন্ধ পড়েছি, যেখানে ‘টাইগার নিয়াজি’কে জাতীয় বীর হিসেবে অঙ্কিত করা হয়। লেখক কখনোই উলেখ করেননি যে, পাকিস্তান সরকার নিয়াজিকে সাধারণত যে পেনশন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের দেওয়া হয় তা বন্ধ করে তার সামরিক র্যাংক ও সামরিক সজ্জা খুলে নেওয়ার পর তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কারণ তদন্ত কমিশন তার বিরুদ্ধে ঢাকায় অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল।
বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন নিয়াজিসহ ২০০ জনেরও বেশী সাক্ষীর পরীক্ষা নেয়। ১৯৭৪ সালে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়, তবে বেশ অনেক বছর এটা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। এই প্রতিবেদন শান্তভাবে মাত্র কয়েক বছর আগে মুক্তি পায়। কমিশন বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের একটি প্রকাশ্য আদালত এবং পান চোরাচালান ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতসহ ১৫টি বিভিন্ন অভিযোগে নিয়াজির জন্য একটি কোর্ট মার্শালের সুপারিশ করে। কিন্তু কোনো সরকারই তা করতে সাহস করেনি, যা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে আত্মসমর্পণের পটভূমি সম্পর্কে পাকিস্তানের জনগণকে আলোকিত করতে পারত। ১৯৭১ সাল সম্পর্কে অনেক পাকিস্তানির সরলতা ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর এক অস্বস্তিতে ফেলে দেয়, যখন জনপ্রিয় বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান এক বিশাল জনসভায় ঘোষণা করলেন যে, তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ অবরুদ্ধ করবেন।
ইমরান খান শুধু কিছু ফেডারেল মন্ত্রী নয়, বরং বিরোধীদলেরও কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হন। পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি তাকে ‘ইমরান খান নিয়াজি’ বলে ডাকেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তিনি ১৬ ডিসেম্বরের ট্রাজেডির কিছুই জানেন না। এটা কাকতালীয় বিষয় যে, খান মিয়ানওয়ালির নিয়াজি গোত্রের মানুষ এবং তিনি ২০০২ সালে মিয়ানওয়ালি থেকেই প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিষদের আসন জয় লাভ করেন। তার পুরো নাম ইমরান খান নিয়াজি। তিনি সর্বদা ১৯৭১ সালের সেনা অভিযানের সমালোচনা করেছেন এবং ১৯৭১ সালে সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা সংঘটিত বাড়াবাড়ি আচরণের জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাপ দিয়েছেন। তা সত্তে¡ও তিনি মনে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জন্য লজ্জার দিন।
কেন? আমি হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্টের ৫২০ নং পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি, যেখানে বলা হয়েছে, নিয়াজি ঢাকা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। ভারতীয়দের আক্রমণ পরিচালনার জন্য সাত দিনে কমপক্ষে একটি সময় এবং ঢাকার প্রতিরক্ষা কমাতে আরও একটি সপ্তাহ প্রয়োজন- দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তার এমন বক্তব্যসত্তে¡ও একটি লজ্জাজনক ও অকাল আত্মসমর্পনে তিনি রাজী হন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘যখন তাকে (নিয়াজিকে) ভারতীয় কমান্ডার ইন-চীফ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেন, তখন তিনি আত্মসমর্পণে সম্মত হতে লজ্জাজনক ও শোচনীয় মনোভাব প্রদর্শন করেন। তিনি লজ্জাজনক ও শোচনীয় মনোভাব প্রদর্শন করেন ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে অস্ত্র সমর্পণে সম্মত হয়ে আত্মসমর্পণের দলীলে স্বাক্ষর করার সময়। এছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরে বিজয়ী ভারতীয় জেনারেল অরোরাকে স্বাগতম জানানোর সময় নিজে উপস্থিত থেকে ও জেনারেলকে গার্ড অব অনার প্রদর্শনে নিজের এডিসিদের উপস্থিত থাকতে বলেও তিনি লজ্জাজনক ও শোচনীয় মনোভাব প্রদর্শন করেন। ভারতীয়দের পক্ষ থেকে পাবলিক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের প্রস্তাব গ্রহণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য অনন্ত লজ্জা এনে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালে ৭ ডিসেম্বরের একটি ঘটনা উলেখ করা হয়েছে। ‘পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর এ এম মালিক নিয়াজিকে ডেকে যুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। নিয়াজি যখন চোখের পানি ফেলে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলেন, তখন গভর্নর শক্ত করে কয়েকটি শব্দ বললেন।’ প্রতিবেদনের ৫৩৪ পৃষ্ঠা বলছে, ‘যদি জেনারেল নিয়াজি তাই করতেন এবং তা বাস্তবায়নে নিজের জীবন হারিয়ে ফেলতেন, তাহলে তিনি ইতিহাস তৈরী করতেন এবং পরবর্তী জেনারেশনের কাছে এক মহান নায়ক ও মহান শহীদ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতেন। কিন্তু ঘটনা প্রমাণ করে যে, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বরের পরে তিনি যুদ্ধের আগ্রহ একেবারে হারিয়ে ফেলেন।’
বরখাস্তের পর নিয়াজি The Betrayal Of East Pakistan (১৯৯৮) নামে একটি বই লিখেন এবং বিচারপতি হামুদুর রহমানের সমালোচনা করেন, কারণ তিনি একজন বাঙ্গালি। বিচারপতি রহমান শুধু সেই সব সেনা কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন ও পুনরায় তাদের বিবৃতি শুনেছেন, যারা পূর্ব পাকিস্তানে নিয়াজির অধীনে কাজ করেছেন। মজার ব্যাপার হলো তারা সবাই ছিলেন পাঞ্জাবি। মেজর জেনারেল (অব.) খাদিম হুসাইন রাজা হচ্ছেন ১৯৭১ সালে সামরিক অপারেশনের মাস্টারমাইন্ড। তিনি তার A stranger In My Own Country গ্রন্থে নিয়াজির কিছু লজ্জাজনক শব্দ উদ্ধৃত করেন, ‘একদিন নিয়াজি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন। কিছু বাঙ্গালি অফিসারদের উপস্থিতিতে তিনি উর্দুতে বলেন, ম্যাঁয় ইস্ হারামযাদী কৌম কী নসল বাদাল দুঙ্গা- আমি এই হারামজাদা জাতির বংশধারা বদলে দেব।’ এটা পরিষ্কার যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সকল অফিসার ও সৈন্য নিয়াজির মতো ছিলেন না। ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের চীফ অব স্টাফ ছিলেন মেজর জেনারেল জেএফআর জ্যাকব। তিনি নিয়াজির সাথে আলোচনা করে আত্মসমর্পণের দলীল চূড়ান্ত করেন এবং Surrender At Dacca গ্রন্থে তার সংস্করণ প্রদান করেন। তিনি লিখেছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে সাহসের সাথে যুদ্ধ করেছে। তারা তাদের আত্মরক্ষামূলক অবস্থান থেকে দৃঢ়সংকল্প ছিল। একই পৃষ্ঠায় তিনি বলেন, মুক্তিবাহিনীকে অবশ্যই যথাযথ সম্মান দিতে হয়। তাদের গেরিলা অপারেশন পাকিস্তানিদের বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়। ইন্দো-বাংলাদেশ যৌথ বাহিনীর বিজয়ে তাদের অবদান ছিল বিশাল। জ্যাকব প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, নিয়াজি তার ব্যক্তিগত অস্ত্র ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেননি। তিনি সেনাবাহিনী ইস্যুকৃত সাধারণ পয়েন্ট ৩৮ রিভলবার জমা দেন। জ্যাকব নিজে অস্ত্র পরীক্ষা করেন। পিপা গোবর দিয়ে ভরে দেওয়া হয়েছিল এবং দৃশ্যত বেশ কিছু সময় পর্যন্ত সেটা পরিষ্কার করা হয়েছিল না। গলায় ঝোলানো হুইসেলের রশি ছিল ময়লা এবং এর একটি অংশ ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। এটি কমান্ডিং জেনারেলের ব্যক্তিগত অস্ত্র ছিল না। যতদূর সম্ভব, নিয়াজি এটি তার কোনো সামরিক পুলিশের কাছ থেকে গ্রহণ করেন এবং তার ব্যক্তিগত অস্ত্র হিসেবে জমা দেন।
পূর্ব পাকিস্তানের পতনের পঁয়তালিশ বছর পর কিছু পাকিস্তানি ১৬ ডিসেম্বরকে তাদের জন্য লজ্জার দিন হিসেবে স্বীকার করে নিতে প্রস্তুত। এমনকি ইমরান খান তার অবরোধ পরিকল্পনা পুনঃনির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন। খান উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, আত্মসমর্পণের দিন নওয়াজ শরীফ সরকারের বিরুদ্ধে তার বিজয়ের দিন হতে পারে না। পাকিস্তানের জনগণের ১৯৭১ সালের আত্মসমর্পণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন। পার্লামেন্টে কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে বিতর্ক করা উচিত। তাদের জানা প্রয়োজন, জাতীয় রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কেন দেশের জন্য খারাপ। তাদের জানা উচিত যে, নিয়াজি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ধোঁকা দিয়ে তার পয়েন্ট ৩৮ রিভলবার বাঁচিয়েছেন, তবে তিনি ১৬ ডিসেম্বর নিজ দেশের সম্মান বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর প্রধান কারণ তিনি মূলত ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি, তিনি যুদ্ধ করেছেন তার নিজের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের অনেকেই অস্বীকারের রাজ্যে বাস করেন। তারা মনে করেন, ভারত পাকিস্তান ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা তাদের নিজেদের ভুল স্বীকার করতে প্রস্তুত নন। ভারত অবশ্যই ষড়যন্ত্র করেছে, তবে বাঙ্গালিদের মনন ও স্মরণে ঘৃণা সৃষ্টি করেছে কে? সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৭১ সালের সামরিক অপারেশন। মুজিব সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিলেন, অথচ ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে আমরা তার হাতে মৃতদেহ তুলে দিয়েছি। এটাই অস্বীকারের রাজ্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে ভাষান্তর ইমতিয়াজ বিন মাহতাব
* হামিদ মীর : পাকিস্তানের জিও টিভির নির্বাহী সম্পাদক